প্রানভয়ে ঘড়বাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছে পাহাড়িরা
অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
বৃহস্পতিবার সকালে খাগড়াছড়ি জেলার সদর উপজেলার চার মাইল এলাকায় লংগদু উপজেলার যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নুরুল ইসলামের মরদেহ পাওয়া যায়। এর প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে যুবলীগের নেতাকর্মীরা টিনটিলায় নুরুল ইসলামের হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশের প্রস্তুতি নেয়। এর কিছুক্ষণ পরই পাহাড়িদের ঘরে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।
পুলিশ জানায়, মো. নুরুল ইসলাম নয়নকে (৩৫) তার মোটরসাইকেলসহ দুই আদিবাসী ভাড়ায় নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কের চার মাইল (কৃষি গবেষণা এলাকা সংলগ্ন) নামকস্থান থেকে নুরুল ইসলাম নয়নের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত নুরুল ইসলাম নয়ন লংগদুর বাইট্টা পাড়ার বাসিন্দা মৃত ফয়েজ আহম্মদের ছেলে। নয়ন ছিলেন ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক।
শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে নুরুল ইসলাম নয়নের মরদেহ খাগড়াছড়ি থেকে লংগদু নেয়া হয়। মরদেহ বাইট্টা পাড়ার নিজ বাড়িতে নেয়া হলে সেখান থেকে সকাল ৯টার দিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীসহ উত্তেজিত লোকজনের একটি মিছিল লংগদু উপজেলা সদরে যায়।
পথে মিছিল থেকে লংগদুর তিনটিলাসহ উপজেলা সদরের আশেপাশে পাহাড়িদের বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে তাৎক্ষণিক থমথমে হয়ে ওঠে লংগদুর পরিস্থিতি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জসহ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি চালালে পুলিশের সঙ্গে দুর্বৃত্তদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
লংগদু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ায় উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। এখনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
খাগড়াছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ হান্নান জানান, বৃহস্পতিবার দিঘীনালা-খাগড়াছড়ি সড়কের খাগড়াছড়ি সদর থানার চার মাইল এলাকার মুল সড়কের পাশে মো. নুরুল ইসলামের মরদেহ পাওয়া যায়। তবে তার মোটরসাইকেলটি পাওয়া যায়নি। এটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তার শরীরে জখমের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তে হত্যা নাকি দুর্ঘটনা তা জানা যাবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোয়েন্দা শাখা) মো. সাফিউল সারোয়ার বলেন, অনেক চেষ্টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় সর্বশেষ শুক্রবার দুপুরে ১৪৪ ধারা জারি করেছেন লংগদু উপজেলা প্রশাসন। পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত লংগদুতে ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে। বর্তমানে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়ে আসছে। তবে এখনও পাহাড়ি বাঙালি উভয়ের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এদিকে যুবলীগ নেতা নুরুল ইসলাম নয়নকে হত্যার প্রতিবাদ ও দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে রাঙামাটি শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
শহরের বনরূপা চত্বর থেকে মিছিলটি বের করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘুরে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বনরূপা আলিফ মার্কেট চত্বর গিয়ে সমাবেশ করা হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা যুবলীগ সভাপতি ও রাঙামাটি পৌরসভা মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. সোলাইমান চৌধুরী, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আবদুল জব্বার সুজনসহ অন্যরা।