মাহফুজুর রহমানের গাওয়া গান প্রসঙ্গে তসলিমার প্রতিক্রিয়া

 

 

 

অনলাইন ডেস্ক  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

দেশের বেসরকারি চ্যানেল ‘এটিএন বাংলা’য় প্রচারিত চ্যানেলটির চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের গান গাওয়া প্রসঙ্গে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। কাগজ২৪বিডি ডট কমের পাঠকদের জন্য সেই স্ট্যাটাসটি হুবুহু তুলে ধরা হল-

তসলিমা লিখেছেন, ফেসবুকে বাংলাদেশের মানুষ গতকাল থেকে হাসছে। হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ছে। কারণ এটিএন চ্যানেলের কর্ণধার মাহফুজুর রহমান গান গাইতে না জেনেই গান গেয়েছেন চ্যানেলে। বাজে লিরিক, বাজে সুর, বাজে কণ্ঠ। টাকা আছে বলে টপ মডেলদের দিয়ে অভিনয় করিয়েছেন। গানের কথার সঙ্গে মিলিয়ে হাত পা নেড়েছেন, সোজা কথায় আনকুথ (অভ্যস্ত নয়) আর আউটডেটেড (সমসাময়িক নয়)। সব মানছি। কিন্তু কিছু পজিটিভ জিনিস ভাবছি। তা হলো:

১। কোটিপতিরা টাকা কামানোর ধান্দায় থাকে। মদ আর ‘মেয়েমানুষ’ নিয়ে প্রমোদতরী ভাসায়। তারা দুর্নীতি ও দুষ্কর্ম এত করে যে, পাবলিকের সামনে পারতপক্ষে আসে না। তাদের গান গাওয়ার শখ টখ থাকে না। এই লোকটি শিল্প সাহিত্যে মন প্রাণ ঢেলে দিয়েছেন। ইনি আর সব কোটিপতির চেয়ে ভিন্ন।

২। গানের কথাগুলো সবই কোনো নারীকে নিয়ে, যাকে তিনি খুব ভালোবাসেন। তার সব গানই ভালোবাসা আর বিরহের গান। কোনও নারীকে খুব মিস করছেন, ফিরে আসতে বলছেন। যাকে ছাড়া তার কিছু ভালো লাগছে না। সেই নারীর সঙ্গে ছিল তার সুখের জীবন। সেই সুখের জীবন এখন আর নেই তার। ফিলদি ধনীরা সাধারণত এমন স্বীকারোক্তি করে না। তাদের এক গেলে আরেক আসে। কারো জন্য তারা কাঁদে না। এই লোকটি ভিন্ন। লোকটি প্রেমিক। হয়তো আউটডেটেড প্রেমিক। কিন্তু প্রেমিক। উদার। সংবেদনশীল।

৩। ধনীদের অনেক রকম স্বপ্ন বা সংকল্প থাকে। কোনো প্রাসাদ বা কোনো জাহাজ বা কোনো ক্যাসিনো কিনে ফেলা। বা বিশাল কোনো জুয়ায় জিতে যাওয়া বা কাউকে ঠকানো, বা কোনো জাতশত্রুকে খুন করা। কিন্ত এই লোকটি ওসব কিছু চাইছেন না, তার নিজের চ্যানেলে একটু গান গাইতে চেয়েছেন, এই যা।

৪। লোকটি ভালো গান গাইতে পারেন না বলে শুটিং বা এডিটিং-এর সময় তার কর্মচারীরা নিশ্চয়ই তুমুল হেসেছে। তিনি তাদের হাসির শব্দ শুনতে পাননি। তাকে নিশ্চয়ই মিথ্যে প্রশংসা করে বোকা বানানো হয়েছে। এত প্রতাপশালী হয়েও মানুষ যে তাকে নিয়ে হাসাহাসি করছে তা বুঝতে পারছেন না। বড় সরল সোজা তিনি, বড় সাদাসিধে।

৫। গান গাইতে জানেন না, তারপরও আবেগ তার এত বেশি যে, গান গাওয়া শিখে তারপর গাইবেন, এই তর তার সইলো না। গেয়ে দিলেন। একটুও ভাবলেন না লোকে যে মন্দ বলবে। এর মানে তার ইমোশান মাত্রাছাড়া। এত ইমোশান ফিলদি ধনীদের সাধারণত থাকে না। তারা বুঝে শুনে চিন্তা ভাবনা করে প্রতিটা স্টেপ ফেলে।

atn+toslima-2

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!