মুক্তিযুদ্ধের প্রতিজ্ঞার ভীতিমুক্ত বাংলাদেশ চাই
মুক্তিযুদ্ধের প্রতিজ্ঞার ভীতিমুক্ত বাংলাদেশ চাই
সিডনীর কথকতা-৪২
রণেশ মৈত্র (সিডনী থেকে)
সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ
১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ-মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলী তার ইতিহাস-তার প্রেক্ষাপট-সবই বাঙালি জাতির জন্য সীমাহীন গৌরবের। তা সত্বেও আজ ঐ মুক্তিযুদ্ধের মাত্র ৪৭ বছর পরে এসে কখনও কখনও মনে হয় আমরা যেন সেগুলি ভুলতে বসেছি।
যদি আমরা পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পূর্বে বৃটিশ সা¤্রাজ্যবাদের শাসন শোষণ ও সীমাহীন বর্বরতার বিরুদ্ধে পরিচালিত গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রামের ইতিহাস জেনে গর্বিত বোধ করি-যদি আমরা ২৩ বছর ধরে পরিচালিত পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর ও তাদের জানোয়ারতুল্য সেনাবাহিণরি সীমাহীন বর্বরতা, নিষ্ঠুরতা, অত্যাচর, নির্যাতনের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে পরিচালিত বাঙালির ঐক্যবদ্ধ ও দু:সাহসী সংগ্রাম ও আন্দোলনের কথা বিস্তৃত না হয়ে থাকি তবে মাত্র ৪৭ বছরেই নিজ মাতৃভূমিতে সংঘটিত মুক্তিযুদ্ধ ও সুদীর্ঘ ঐতিহাসিক পটভূমি বাঙালি জাতি ভুলে যাবে কেনা দু:খে।
সত্য বটে, কেউ কেউ প্রকৃতই চাইছে বাঙালি জাতি তার গৌরবের ঐ ইতিহাস ভুলে থাক বিস্মৃত হোক তার ঐতিহাসিক পটভূমি অসংখ্য আন্দোলনের গৌরবগাথা ও তার দাবী ও অঙ্গীকার সমূহ-কিন্তু সে গুড়ে যে বালি তার লক্ষণসমূহ বেশ কয়েক বছর ধরে সংঘটিত কয়েকটি আকষ্মিক বিষ্ফোরণে ১৬ কোটি বাঙালির সামনে দিব্যি প্রতিভাত হয়েছে।
গৌরবে গৌরবান্বিত বাঙালি জাতি, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার স্বল্প কয়েক মাস পরেই তার বিষ্ময়কর সূচনা হলো ১৯৪৮ এর মার্চে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে। ুঐ সময় থেকেই সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিতত্বের বিরোধিতার উম্মেষ ঘটেছিল পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর।
বাঙালি দেখেছিল বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষার মর্য্যাদা দিতে অস্বীসৃতি জানিয়ে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী বাঙালি জাতিকে অশিক্ষিত অনুন্নত ও শোষিত জাতিগোষ্ঠীতে স্থায়ীভাবে পরিণত করার সুষ্পষ্ট হুমকি দিচ্ছে। হুমকি দিচ্ছে রবীন্দ্রনাথ, নজরুলসহ বাঙালি সংস্কৃতির সকল দিকপাল থেকে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলার। কিন্তু ঐ হুমকি ও ভীতি প্রদর্শন করা হলে বাঙালি ভীতিগ্রস্ত হয় নি-সাহসের সাথে নিরন্তর তা প্রতিরোধ করতে করতেই সমগ্র জাতি ৫২ সালে এসে রীতিমত গর্জে উঠেছিল-উল্টো কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিল শাসকগোষ্ঠীকেই। তাই রীতিমত আতংকগ্রস্ত হয়েই তারা একুশে ফেব্রুয়ারির মিছিলে ঢাকার রাজপথে মিছিলরত তরুণ-তরুণীদের বুকে গুলি ছুঁড়েছিল-লাঠি চার্জ করেছিল-কারা প্রকোষ্ঠে নিয়ে আটকে রেখেছিল সমগ্র প্রদেশের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের নেতৃবৃন্দকে।
কিন্তু বাঙালি জাতি ভয় পায়নি তবুও। সারা দেশে দফায় দফায় গড়ে তুলেছে রাজবন্দীদের নি:শর্ত মুক্তির দাবীতে গণআন্দোলন এবং শেষ পর্য্যন্ত এক বছরের মধ্যেই ভাষা আন্দোলনে আটক সকল রাজবন্দীর নি:শর্ত মুক্তি আদায় করেই ছেড়েছে।
অত:পর বিনা-বিচারে আটকের আইনকে একটি কালাকানুন বলে অভিহিত করে তার বাতিল দাবী করেও দফায় দফায় আন্দোলন গড়ে তুলেছে। ঐ আইনটি ও ছিল জাতিকে ভয় দেখানোর মস্ত এক হাতিয়ার।
কেন্দ্রে ও প্রদেশে মুসলিমলীগ ক্ষমতায় থেকে শুধুমাত্র বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার মর্য্যাদা দিতেই অস্বীসৃতি জানায় নি, ভাষা আন্দোলনকারীদেরকে হত্যা, নির্য্যাতন ও আটক বা নানা কালাকানুন করেই ক্ষান্ত হয় নি- তারা প্রাদেশিক সংসদের ৩০ এরও অধিক আসনে উপনির্বাচন অনিদৃষ্টকালের জন্য বে-আইনীভাবে স্থগিত করে রাখতেও দ্বিধা করে নি। তাই পূর্ব বাংলার তরুণ সমাজ অবিলম্বে সকল উপনির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবীতে আন্দোলন শুরু করলে তাও যখন অস্বীকৃত হয় তখন তারা দাবী উত্থাপন করে সমগ্র পাকিস্তানে একটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে কেন্দ্রে ও পাঁচটি প্রদেশে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার। উল্লেখ্য, ১৯৪৬ এর নির্বাচনের রায়ের ভিত্তিতে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৯৫৩ সলে অর্থাৎ তার দীর্ঘ সাত বছর পরেও কোন সাধারণ নির্বাচন আহবা করে নি পাকিস্তান সরকার।
গণ আন্দোলনের, বিশেষ করে ১৯৫২ সালের ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের ভয়ে-ভীত হয়ে পাকিস্তান সরকার সমগ্র পাকিস্তানের নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবী না মানলেও পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবী মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিল। ঘোষণা দেওয়া হলো ১৯৫৪ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত হবে পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক আইন সভার প্রথম নির্বাচন।
বাংাদেশের তরুণ সমাজ একটি ভীতিমুক্ত পূর্ব বাংলা গঠন, সাম্প্রদায়িক-বৈষম্যমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্রগঠন, আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করতে প্রাদেশিক সরকারকে শক্তিশালীকরণের জন্য পূর্ববাংলার প্রাদেশকি স্বায়ত্ব শাসন, বাক, সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং নানাবিধ অর্থনৈতিক দাবী সমবায়ে ঐতিহাসিক ২১ দফা কর্মসূচি প্রণয়ন করে তার ভিত্তিতে মুসলিম লীগ-বিরোধী যুক্তফ্রন্ট গঠন করার জন্য যুবসমাজ তৎকালীন তিন প্রধান রাজনৈতিক নেতা শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হক, মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানী ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী জননেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দির উপর ব্যাপক চাপ প্রয়োগ করেন।
ফলে, এক পর্য্যায়ে আকাংখিত যুক্ত ফ্রন্ট গঠিত হলে সমগ্র পূর্ব বাংলার আনন্দের বন্যা বইতে শুরু করে এবং শেষ পর্য্যন্ত সরকারি নানা জুলুম, নির্য্যাতনকে উপেক্ষা করে বাংলার যুবসমাজ একটি ভয়মুক্ত, শংকামুক্ত পূর্ববাংলা গঠনের লক্ষ্যে সকল শক্তি নিয়োগ করে যুক্তফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থীদেরকে (মাত্র নয়টি আসন বাদে) বিপুল ভোটাধিক্যে বিজয়ী করে এসে নতুন এক ইতিহাস রচনা করে। যুক্তফ্রন্ট নেতা শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠিত হয়।
এভাবেই ভীতিমুক্ত, শংকামুক্ত-রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবন গড়ে তুলতে দৃঢ় প্রত্যয়ে এগুরো শুরু করে বাঙালি জাতি সাফল্যের সাথে।
কিন্তু তাতেও বাধা আসা, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা বন্ধ হলো না। শতকরা ৯০টি আসনে জিতে ক্ষমতাসীন হলেও সর্বাধিক জনপ্রিয় ঐ যুক্তফ্রন্ট সরকারকে উৎখাত করে গভর্নর শাসন প্রবর্তন করলেঅ কেন্দ্রীয় মুসলিমলীগ সরকার একটি গণতন্ত্র বিরোধী পুরাতন আইনের অপপ্রয়োগ ঘটিয়ে (৯২ ক ধারা)। অত:পর চলে নানামুখী ষড়যন্ত্র। কিন্তš গণদাবীর মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয় কেন্দ্রীয় সরকার। ১৯৫৬ সালে আওয়ামীলীগ নেতা আতাউর রহমান খানের নেতৃত্বে গঠিত হয় আওয়ামীলীগ কোয়ালিশন সরকার। ৯২ (ক) ধারা জারী করে যে হাজার জাহার তরুণ-তরুণীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল মূখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান খান স্বয়ং ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে আটক রাজবন্দীদেরকে মুক্ত করে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে এনে বিশ্বে এক নতুন ইতিহাস রচনা করেন।
অত:পর আওয়ামীলীগ নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী একই বছরে কিছুকাল আগে প্রধানমন্ত্রী হয়ে পাকিস্তানের স্বাধীন, নিরপেক্ষ, সা¤্রাজ্যবাদ বিরোধী পররাষ্ট্রনীতির প্রশ্নে দলীয় অঙ্গীকার ভঙ্গ করে পাশ্চাত্য অনুসারী প্রতিক্রিয়াশীল নীতি গ্রহণ করলে ১৯৫৭ সালের জুলাইতে আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মী দল থেকে পদত্যাগ করে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সকল প্রদেশের কতিপয় প্রগতিশীল দল সমবায়ে একটি নিখিল পাকিস্তান প্রগতিশীল বাম ধারায় দল হিসেবে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি রাজনীতিতে এক নতুন প্রতিক্রিয়া বিরোধী, সাম্প্রদায়িক বিরোধী, সা¤্রাজ্যবাদ বিরোধী ধারা সৃষ্টির সম্ভাবনায় ভীত হয়ে ১৯৫৮ সালে সাময়িক শাসন জারী করা হয় সমগ্র পাকিস্তান ব্র্যাপী উৎখাত করা হয় সকল প্রাদেশিক সরকারকে।
অত:পর কিছুকাল নিস্তব্ধতা চলতে থাকে গ্রেফতার ও অন্যান্য নির্য্যাতন আবার অপর পক্ষে গোপনে আন্দোলনের প্রস্তুতি সামরিক আইন প্রত্যাহার ও গণতন্ত্র পুণ:প্রতিষ্ঠাকল্পে দেশব্যাপী সাধারণ নির্বাচনের দাবীতে। প্রথম বিষ্ফোরণটি ঘটে ১৯৬২ সালে।
এবারে কঠিন সামরিক সরকার ও সামরিক আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম চালাতে সকল গণতন্ত্রকামী ছাত্র সংগঠন ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলও। আগের শাসকগোষ্ঠী ও হতে থাকে নির্মম, নৃশংস।
বঙ্গবন্ধু গেলেন লাহেরে বিরোধী দলগুলির সম্মেলনে। ঘোষণা করলেন তাঁর ছয় দফা ঐতিহাসিক কর্মসূচি। পশ্চিম পাকিস্তানের দলগুলি একযোগে তাৎক্ষণিকভাবে তা প্রত্যাখ্যান করে ছয় দফাকে পাকিস্তান ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র বলে আখ্যায়িত করে। উল্লেখ্য, ঐ সম্মেলনে ন্যাশনাল আওয়ামীপার্টি (ন্যাপ) অংশগ্রহণ না করে আওয়ামীলীগের সাথে একাতœতা প্রকাশ করেছে।
ফিরে এলেন বঙ্গবন্ধু। নামলেন ছয় দফার পক্ষে প্রচার অভিযানে সমগ্র পূর্ববাংলার প্রতিটি জেলায়। জেলাগুলিতে আয়োজিত জনসভায় বক্তৃতা দেন- গ্রেফতার হন সভার পর পরই। পরদিন আদালতে জামিন বিকেলে আর এক জেলায় জনসভা। শেষে পুনরায় গ্রেফতার। এভাবে চলতে থাকলো প্রচারাভিযান সর্বত্রই হতো বিশাল বিশাল জন সমাবেশ।
ছাত্র সমাজ গঠন করলো সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। তারা ঘোষণা করলো ১১ দফা সর্মসূচি। বঙ্গবন্ধু লুফে নিলেন ছাত্র সমাজের ঐ এগার দফা কর্মসূচিও।
ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ পূর্ব বাংলার সমগ্র প্রদেশে ছাত্র ও গণ জমায়েতে ৬ দফা ১১ দফার সপক্ষে জনমত গড়ে তোলার অভিযানে। এভাবে চলতে থাকলো, জোরদার হতে থাকলো গণ আন্দোলন।
গ্রেফতার হলেন বঙ্গবন্ধু ও অসংখ্য নেতা-কর্মী। বন্দী মুক্তি আন্দোলনও জোরদার হতে থাকলো। দায়ের করা হলো বঙ্গবন্ধুসহ অনেকের বিরুদ্ধে “আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা।” বিশেষ আদালতে ঐ মামলার বিচার চলতে থাকল তার বিরুদ্ধে আন্দোলন। শ্লোগান ছিল কোটিকণ্ঠে। জেলের তালা ভাঙবো শেখ মুজিবকে আনবো” “জেলো তালা ভাংবো মনি সিংকে আনবো,। “জেলের তালা ভাংবো রাজবন্দীদের আনবে,। “জাগো বাঙালি জাগো” প্রভৃতি।
এক পর্য্যায়ে প্রবল এবং অপ্রতিরোধ্য গণ আন্দোলনের চাপে বঙ্গবন্ধু ও রাজবন্দীরা মুক্তি পেলেন-ভেস্তে গেলো আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিচার। বিজয় হলো জনতার-বাঙালির।
১৯৬৯ এ ঘটে গেল গণঅভ্যুত্থান আগুন ঝরা এক অভ্যুত্থান যেন। এভাবেই আসে ৭০ এ নির্বাচন। অসাধারণ গণরায় ছয়দফা এগার দফার পরিপূর্ণ বিজয়। সামরিক সরকারের বাহানা ক্ষমতা হস্তান্তর হলো না কারণ তারা দেখলো সমগ্র পাকিস্তানের মোট আসনে একক ও নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ তা পেয়ে আওয়ামীলীগ জয়ী হয়েছে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। আলোচনা সংলাপের বাহানা চালিয়ে সামরিক বাহিনী গোপনে আক্রমণ করলো ২৫ মার্চের রাতে ঘুমন্ত বাঙলি জাতিকে। শুরু করলো নির্মম ও পাশবিক গণহত্যা গ্রেফতার করে রাতের অন্ধকারে নিয়ে গেল বঙ্গবন্ধুকে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে।
গণহত্যা চালিয়ে ভীতিগ্রস্ত করতে চাইলো বাঙালিকে-বাঙালি উল্টো গড়লো প্রতিরোধ। অবশেষে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ নয় মাস ব্যাপী। অত:প বিজয় ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১। গোটা পৃথিবীর স্বাধীনতা-গণতন্ত্র শোষণ বিরোধী কোটি কোটি মানুষের বিস্ময়কর সমর্থনে।
১০ জানুয়ারি ১৯৭২ বঙ্গবন্ধু ফিরে এলেন বিজয়ীর বেশে। কোটি জনতা স্বাগত জানালো তাঁকে।
ভাঙ্গা হলো শৃংখল সকল ভীতিে উদগ্র অপচেষ্টাকে। বঙ্গবন্ধু ছিলেন চার মৌলনীতি, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্র সম্বলিত সংবিধান।
তাই আজ যখন ব্লগাররা লেখেন- তাঁরা লিখবেন স্বাধীন ভাবে। “নাস্তিক” আখ্যায় হত্যা চলবে না ভীতি সৃষ্টি চলবে না।
চলবে না বিদেশী হত্যার ধর্মান্ধ অভিযান। ঐ উগ্র ধর্মান্ধদের গ্রেফতার শাস্তি অবশ্যই দিতে হবে বাহাত্তরের সংবিধানের মৌল নীতি অনুযায়ী। ৫৭ ধারা ও অনুরূপ আইনটি বাতিল করতে হবে।
নিরাপদ সড়কের আন্দোলনকারীদের অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে গ্রেফতার করতে ুহবে যারা সড়ক নিরাপত্তা ও শৃংখলা প্রতিদিন ধ্বংস করছে তাদেরকে।
সাম্প্রদায়িক পাঠ্যপুস্তক ও মাদ্রাসার ডিগ্রীকে মাষ্টার্স ডিগ্রীর সমতুল্য ঘোষণা নয় বরং জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলামীকে বে-আইনী করতে হবে। সংখ্যালঘু হত্যাকারীদের শাক্তি চাই।
উন্মুক্ত বাংলাদেশ প্রশ্নে আপোষ নেইঅ কারণ তা মুক্তিযুদ্ধের অর্জন।
লেখক : রণেশ মৈত্র, সাংবাদিকতায় একুশে পদক প্রাপ্ত