মৃত্যুর সাথে কোলাকুলি জীবনের সাথে পাঞ্জা

মৃত্যুর সাথে কোলাকুলি জীবনের সাথে পাঞ্জা
রণেশ মৈত্র (সাংবাদিকতায় একুশে পদক প্রাপ্ত)
সভাপতিম-লীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ

জীবনে বেঁচে থাকাটাই যেন এক যুদ্ধ বাস্তবে তা এক মহাযুদ্ধ। বলা নেই কওয়া নেই রোগ বিরোগ নেই। দিব্যি ঢলে পড়তে হচ্ছে মৃত্যুর হিমশীতল কোলে। সবাই আমরা ঐ বহু-ব্যবহৃত প্রবাদ বাক্যটি জানি, “জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে?” তার চাইতেও উৎকৃষ্ট চরণ হলো মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভূবনে”। বাঁচতে চাই সবাই মিলে এটাও সত্য মহাসত্য। কিন্তু তার নিশ্চয়তা বড়ই দুর্লভ।

এই তো সেদিন বলা নেই কওয়া নেই হারিয়ে গেল ৭০ এর অধিক, তরতাজা নিরাপরাধ নারী-পুরুষ-শিশু ঢাকার অভিশপ্ত চকবাজারে। রাতও তো বেশী নয়-মত্র দশটা। কোথা থেকে কি হলো আজও তা স্পষ্ট হয় নি কিন্তু নিমেষেই হারিয়ে গেল। এক মিনিট আগেও তারা কেউই জানতে পারে নি তারা আগুনের লেলিহান শিখায় জ্বলে পুড়ে মরবে।
জানি না সে রাত্রে ঐ অভিশপ্ত ভবনগুলির বাসিন্দারা রাতের খাবার খেতে পেরেছিলেন কি না? কেউ তখন গল্পগুজবে বন্ধু-বান্ধবের সাথে ডিনার টেবিলে খেতে বসেছিলেন কি না জানি না? ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা রাতের পড়াশুনা শেষ করে ঘুমাতে গিয়েছিল কিনা? খবর পাই নি বাইরে কর্মরতও যাঁরা ছিলেন আকস্মিক অগ্নিকাওন্ডর খবর পেয়ে বাইরে থেকে তাঁরা কেউ ছুটে আসতে পেরেছিলেন কিনা?

জানি না ঘটনার সময় দলে বলে ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী বা বন্ধুবান্ধব বসে টেলিভিশনে কোন শিরিয়াল, কোন নাটক বা দেশ-বিদেশের কোন শহরের চলমান ক্রিকেট বা ফুটবল বা অন্য কোন খেলা বুঁদ হয়ে একাগ্রচিত্তে দেখছিলেন কিনা? কেউ পরীক্ষার প্রস্তুতি পাঠ নিয়ে ব্যস্ত ছিল কিনা না? কোন দম্পত্তি বিছানায় যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কি না?
এর সবগুলিই হয়তো হচ্ছিল নয়তো কিছু কিছু যে হচ্ছিলই তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ থাকার কোন কারণ নেই। কিন্তু তাতে বাদ সাধলো আগুন সর্বগ্রাসী আগুনের লেলিহান শিখা ছারখার করে দিলো সব কিছু,  বিকট আওয়াজে কেউ কারও আর্তনাদও শুনতে না পেয়ে নিজে আর্তনাদ করতে করতেই অঙ্গারে পরিণত হলো। নাড়ীর স্পন্দন থেকে গেল। অনেককে চিহ্নিত করা গেলেও বেশ কিছু কংকাল বা মৃতদেহকে চিহ্নিত করতে না পারায় দাবীদারদের ডি.এন.এ পরীক্ষার আয়োজন করতে হয়েছে। রোজই একজন দু’জন করে চিকিৎসাধীন আহত রোগীর মৃত্যু ঘটছে। দু:সহ যন্ত্রনায় ভুগতে ভুগতে হাজারো চিকিৎসা অগ্রাহ্য করেই মৃত্যু।

এ মৃত্যু এতগুলি প্রাণের মুহুর্তেও মৃত্যু বস্তুত:ই কি অবধারিত ছিলে? কোনভাবেই কি তা প্রতিরোধ সম্ভবপর ছিলো না?
জানি, এর উত্তরে সবাই বলবেন, অবশ্যই সম্ভব ছিলো। বাঁচানো যেত যদি সরকার প্রশাসন নিষ্ঠাবান হতো, যদি তারা দীর্ঘ দশ বছর আগে নিমতলীতে ঘটা আরও বেশী সংখ্যক মানুষের অনুরূপ ঘটনায় মৃত্যু থেকে শিক্ষা নেওয়া হতো। তখনকার গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশগুলিকে যদি সময়মত যথাযথভাবে কার্যকর করা হতো।
কিন্তু সরকার ঐ সুপরিশ মালায় কোন অংশই কার্যকর করলো না। উল্টো দুজন নির্দোষ প্রমানের ঘৃণ্য চেষ্টায় লিপ্ত হলেন। দায়িত্ব প্রথম এবং ঐ সময়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত মন্ত্রীর যে অধিক ছিল এবং দ্বিতীয় সাবেক মন্ত্রীর ও তার চাইতে কম ছিল না তা মানতে কেউই যেন রাজী নন। এই দায়ীদের মনে আদৌ কোন অনুশোচনাও নেই যেন।

বিশাল পদ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রেরও। তিনিও দিব্যি ঘুমিয়ে ছিলেন। শীত শেষের রাতে জ্বলন্ত চকবাজারের লেলিহান অগ্নিশিখার উত্তাপে হয়তো বা ওম হওয়াতে দিব্যি তিনি আরামে নিদ্রামগ্ন হয়েছিলেন।
মন্ত্রনালয়ের সচিবেরা? অপরাপর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কর্মচারীরা? গণমাধ্যমের সামনে তাঁরা কেউ না আসায় তাঁদের বক্তব্য জানাই গেল না। কিন্তু দায়-দায়িত্ব ওপর থেকে নীচ পর্য্যন্ত সকলের উপরেই বর্তাবে বর্তাতে বাধ্য।

প্রয়োজন জবাবদিহিতার কঠোর জবাবদিহিতা। কারণ দেশটা দিনে দিনে পরিণত হয়েছে “যা খুশী তাই করার দেশে” । এমন দেশে প্রকাশ্যে কেমিক্যাল আমদানী হয় তা গুদামজাত হয় আরও নানাবিধ দাহ্য পদার্থ তৈরী বা আমদানী হয়ে আসে এবং পাশাপাশি গুদামজাত হয়। পরিণতি স্বরূপ যা ঘটে তা আমরা দেখলাম নিমতলিতে ১০ বছর আগে তার পুনরাবৃত্তিও দেখলাম ২০১৯ এর শুরুতেই। আবার যে কেউ দেখবেনা আর একটি চকবাজার বা নিমতলি ঘটতে তার নিশ্চয়তা কেউই দেবে না দিলেও সেটা স্রেফ মনভুলানো ব্যাপারই মাত্র।

উচ্চ আদালতে কতগুলি নির্ধেশনা চেয়ে রিট দায়ের হয়েছে কয়েকটা নানাবিধ নির্দেশনাও আসবে ধারণা করি। অতীতেও এসেছে নিমতলি বা চকবাজারের নির্মম হত্যালীলার ছাড়াও অনেক ব্যাপারে মাননীয় বিচারকেরা নির্দেশ দিয়েছেন অসংখ্য। সবই জনস্বার্থে। এই নির্দেশ নির্দেশনা গত দশ বছরে আমাদের হাইকোর্ট সুপ্রিম কোর্ট কতগুলি দিয়েছে তার সবগুলি যদি গ্রন্থীভূত করা যায় তবে হয়তো এক হালি রামায়ন আর এক হালি মহাভারতের সমান আকার ধারণ করবে। কিন্তু তার কতটুকু কার্য্যকর করা হয়েছে? যা করা হয়েছে তাকে স্বাগত কিন্তু যা করা হয় করা হচ্ছেনা অগ্রাধিকার তালিকায় সেগুলি রাখা হলো না চূড়ান্ত অবহেলায় ফেলে রাখা হলো সেগুলি কার বা কাদের নির্দেশে? যাঁদের নিদের্শে যাঁদের অবহেলায় এই উচ্চ আদালতের নির্দেশাবলী ও নির্দেশনা সমূহ কার্য্যকর করা হলো না বা হচ্ছে না বা অবহেলায় চাতালে তুলে রাখা হয়েছে সংশ্লিষ্ট ফাইগুলিকে তাদের সবার বিরুদ্ধে দ্রুত আদালত অবমাননার এবং নরহত্যার দায়ে সংশ্লিষ্ট আদালতগুলিতে একাধিক মোকর্দমা দায়ের করা হোক। দ্রুত মামলাগুলির বিচার করে তাদের অপরাধ প্রমাণিত হলে কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হোক এবং সেই রায়গুলি দ্রুততম সময়ের মধ্যে পরিপূর্ণভাবে কার্য্যকর করা হোক।
পুরান ঢাকা সাঁখারী বাজার সহ নানা এলাকায় দুর্ঘটনা, মৃত্যু আজকের নতুন নয়। কয়েক দশক আগে থেকেই শুনছি ঐ এলাকার সব কিছু ভেঙ্গে চুরে নতুন নতুন বহুতল ভবন নির্মাণ ও রাস্তাগুলি প্রশস্ত করা হবে। এগুলি তো সরকারি সিদ্ধান্ত হিসেবেই বলা হয়েছিল। কিন্তু দায়িত্ব কি কাউকে দেওয়া হয়েছিলো ঐ সিদ্ধান্ত কার্য্যকর করার? না দেওয়া হলে কেন দেওয়া হলো না? কেন তা কার্য্যকর করা হলো না তার খোঁজ খবরই বা কেন নেওয়া হলো না খোঁজ খবর নিয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপই বা কেন নেওয়া হলো না?

আবাসিক এলাকাই হোক, অনাবাসিক এলাকাই বা বাণিজ্যিক এলাকাই হোক-সেগুলিতে ঢুকার, চলাফেরা করার, গাড়ী-ঘোড়া, যান-বাহন চলাচল করবার দুধারে ফুটপাতও থাকার ব্যবস্তা অবশ্যই করতে হবে করতে হবে উপযুক্ত এবং আধুনিক ড্রেনেজ ও পয়ো নিস্কাশনের ব্যবস্থাও।

আধুনিক ঢাকা মাহনগরী বলতে শুধুমাত্র নতুন ঢাকাকেই বুঝায় না। পুরান ঢাকাই হলো আদি ঢাকা। সেটাকে অবহেলা করা আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যকেই অস্বীকার করা বুঝায়। সুতরাং শুরু হতে যাচ্ছে এমন যে প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন কিছু দেরীতে শুরু করলেও জাতীয় স্বার্থের তেমন একটা ক্ষতি হবে না সেগুলি বাস্তবায়ন প্রয়োজন বোধে স্থগিত রেখে বরাদ্দকৃত অর্থ পুরান ঢাকার বিজ্ঞানসম্মত আধুকায়ন প্রকল্পে বরাদ্দ করে এই প্রকল্প বাবদ নতুন নতুন উৎসে বাজেট থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করে পুরাতন ঢাকার হাজার হাজার মানুষের জীবন ধারার উন্নয়ন সাধন করা অগ্রাধিকার পেতে অধিকারী।

যে হারে, যেভাবে গণহারে মৃত্যু ঘটলো নিমতলি ও চকবাজারে তাকে কোনভাবেই দুর্ঘটনা বলে অভিহিত করা চলবেনা স্পষ্টত:ই তাকে গণহথ্যা বলে অভিহিত করতে হবে। সুতরাং সে দৃষ্টিতেই ঘটনা সমূহকে দেখতে ও তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
এক্ষেত্রে দলীয় বিবেচনার কোন অবকাশ নেই। যাঁরাই দায়ী হোন তিনি বা তাঁরা যে দলের কর্মী বা নেতাই হোন প্রশাসনের উঁচু বা নীচু যে পদেই অধিষ্ঠিত থাকুন বা কেন অথবা অবসরে গিয়ে থাকলেও দ্বিধাহীনভাবে তাদের অপরাধের শক্তি নিশ্চিত করতে হবে।

এই দুটি ঘটনাই তো শুধু নয়। দেশজুড়ে প্রতিদিন যে অসংখ্য মানুষ নর-নারী-শিশুর প্রাণ কেড়ে নেওয়া হচ্ছে তার কোন বিচার সমগ্র দেশবাসী চাওয়া সত্বেও আজতক হলো না তার প্রস্তাতিত নেই। এগুলিও তো গণহত্যা। এই হত্যার দায়-দায়িত্ব সড়কে যানবাহনের চালকদের লাইসেন্স যাঁরা দেন যাাঁরা যানগুলির ফিটনেস সার্টিফিকেট দেন যাঁরা “পরিবহন মালিক শ্রমিক সমিতি” নামে সংগঠন করেন ও তার নেতৃত্বে অবস্থান অবস্থান করে যাত্রী স্বার্থ বিরোধী ভূমিকা অবলম্বন করে হত্যাকারীদের পক্ষাবলম্বন করেন তারাও অবশ্যই এই দৈনন্দিন হত্যালীলার দায়িত্ব নিজ নিজ কাধে না নিয়ে তাকে অস্বীকার করে নিজ নিজ দায়িত্ব অবহলো করতে পারেন না। করলেও তার উপুক্ত শাস্তির হাত থেকে রেহাই পেতে পারেন না।

এই আমরাই তো মহাদু:খে বলে থাকি “সব সম্ভাবের দেশ বাংলাদেশ”। বলি “এদেশ জন্মে পদাঘাতই শুধু পেলাম সেলাম তোমাকে সেলাম”। আসলে দেশটা যদি দেশের মানুষের স্বার্থে চলতো, মানুষের সুখ-দু:খের সাথী হতো তবে তো মানুষকে এমন কথা বলতে হতো না। তাই দেশটাকে খুশীদের হাতে না রেখে মানুষের স্বার্থের রক্ষকদের হাতে ফিরিয়ে আনতে হবে। প্রশাসন থেকে মানুষের স্বার্থ বিরোধীদেরকে বাদ দিলে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করার মধ্যেই নিহিত আছে। দেশটাকে মানুষের স্বার্থে কাজ করার পথে ফিরিয়ে আনার কাজ। এই কাজে ব্যর্থ হওয়া চলবে না। এ এক লাড়ই প্রচন্ড লড়াই এবং এ লাড়াই এ জিততে হবে জিততেই হবে যদি আমরা মানুষ বাচাতে চাই।

“সড়ক দুর্ঘটনা” অভিধায় অভিহিত হয়েছে সড়কে গণহত্যা বা মানব হত্যা। সম্প্রতি বহুল প্রচারিত দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে শেষ পৃষ্ঠায় তিন কলাম শিরোনামে লেখা হয়েছে “ট্রাক মসজিদে, বাসের নীচে প্রাইভেট কার।” কী মর্মান্তিক কী অমানুষিক ড়ক নিরাপত্তা(? বা সড়ক নৈরাজ্যের আধুনিকতম প্রকৃষ্ট উদাহরণ একটি। ঐ খবরে বলা হয়েছে, “চট্টগ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাক মসজিদে ঢুকে গেলে তার চাপায় নিহত হয়েছেন প্রাইভেট কারযাত্রী দুই চিকিৎসকসহ তিনজনের। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে দুই বাসের চাপায় মারা গেছেন এক যুবক। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে সড়ক “দুর্ঘটনায়” মারা গেছেন আরও আটক। এগুলি এক দিনের ঘটনা। ঘটনা এমনই যে তা নিত্যদিন ঘটছে ঘটেই চলেছে। রীতিমত ভাড়ার টাকা গুনে বাসে ট্রাকে কারে উঠে গন্তব্যের উদেদেশ্যে যাত্রা করে চলন্ত গাড়ীতে শ্রেফ চালকের অথবা খুত সম্পন্ন গাড়ী হলে মালিকের অভিমুনাফা লোভের এবং বিটিআরসি নামক কুখ্যাত সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঘুষখোর কর্মকর্তাদের দেওয়া ফিটনেস সার্টিফিকেটের কল্যাণে তথাকথিত ঐ দুর্ঘটনা গুলি সমগ্র বাংলাদেশে প্রতিদিন ঘটছে। কিন্তু দেখার কেউ নেই। কারণ যে মরিষা দিয়ে ভূত ছাড়ানো হবে সেই মরিষাতেই ভূত। আর তাদের লালসা চারিতার্থ করতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি।

ছাত্র-তরুণেরা গত বছর আন্দোলন করেছিলেন সড়কে শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে। তাদের অনেকের হাতে ছিল ধাশের শুরু লাঠি। কিন্তু ঐ লাঠি কদাপি অস্ত্রে পরিণত হয় নি। তার চলমান গাড়ীগুলি রাস্তারধারে এনে চালকদের লাইসেন্স ও যানগুলির ফিটনেস সার্টিফিকেট পরীক্ষা করলেন কয়েক সপ্তাহ যাবত। ত্রুটিপূর্ণ কাগজপত্র বা কাগজপত্রহীন কাউকে পেলে সে গাড়ীগুলি যাত্রীসহ পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে আইনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে। এভাবে অনেক গাড়ী বাজেয়াফত হলো অনেক ড্রাইভার শাস্তি পেলো। বহুলাংশে সড়কে শৃংখলা ফিরে এলা ঢাকা শহরে। মানুষ তাদের অভিনন্দন জানাল প্রধান মন্ত্রীও জানালেন কিন্তু তারপর পরই নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার নির্য্যাতন করা শুরু হলো। এক পর্য্যায়ে ঐ আন্দোলন প্রত্যাহৃত হলো এবং মাত্র ২/৩ মাস যেতে না যেতেই রাজধানীর সড়ক গুলির চেহারা পূর্বাবস্থায় ফিরে এলা যেন সেটাই কর্তাব্যক্তিদের কাম্য।

সরকার একটি ঢাউস কমিটি গঠন করেছেন সড়ক দগুর্ঘটনা সমূহের কারণ র্নিধারণ করে তারা সমাধানের পথ বাতানোর জন্য। তার প্রধান বানানো একজন বিতর্কিত মন্ত্রী সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিকদের নেতা হওয়ায় “পরিবহন মালিক শ্রমিক সমিতির স্থায়ী সভাপতিকে। ফলটা হলো এই সকল অপরাধীই স্বস্তি পেলো আর পেলো তাদের নিরাপত্তার গ্যারান্টি। আর যাত্রী সাধারণ? তারা ভাড়াও দেবেন জীবনও দেবেন। ব্যস খেল খতম।

আর কতোকাল চলবে এই দু:সহ অবস্থা? এমন তথাবহ এবং প্রাণ ঘাতী নৈরাজ্য? এর শেষই বা কোথায় এবং কখন ও কিভাবে তা আমরা কেউই জানি না।

ডিজিট্যাল বাংলাদেশ গড়ার কথা শুনছি অনেকদিন হলো। শুনছি না শুধু দেখছিও। নানাক্ষেত্রে তা করাও হয়েছে এবং হচ্ছে। দেশবাসী তার সুফরও পেতে সুরু করেছে সন্দেহ নেই। কিন্তু এই যে একটি সেক্টর বিশাল নেটওয়ার্কে বিস্তৃত সেক্টরটিকে জনবান্ধক রতে হলে তার অন্যতম পূর্বশর্ত হলো রাজপথগুলিতে দিবারাত্র যানবাহনের অবাধ চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে তারও ডিজিট্যালাইজেশন। নতুবা এর নিয়ন্ত্রণ আজ অসম্ভব হয়ে পড়েছে। রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে নারী পুরুষ পুলিশদের লাঠি হাতে যান-বাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে দঁড়িয়ে থাকার দরকার নেই বরং লাল বাতি-নীলবাতি-হলুদ বাতিই পারে বহুলাংশে শৃংখলা আনতে। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাতে যানজট হবে সত্য কিন্তু দুর্ঘটনা ও মৃত্যু অনেকাংশ্ডেি হ্রাস পাবে মানুষের মনে নিরাপত্তা বোধ জাগ্রত হবে। তার সাথে প্রয়োজন সড়কগুলি সম্প্রসারণ, বিটিআরসির অসৎ কর্মকর্তাদের শাস্তি-শাস্তি লোভাতুর পরিবহন মালিক শ্রমিক সমিতির এবং অশিক্ষিত, স্বল্প প্রশিক্ষিত, অভিজ্ঞতা বিহীন চুড়ান্ত লক্ষ্য হোক মানুষ বাঁচানোর।


  • প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। কাগজ২৪-এর সম্পাদকীয় নীতি/মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য কাগজ২৪ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!