ঢাকায় লাগামহীন ভর্তি ফি : বাচ্চাদের স্কুলে দিতে পারছেন না ম্যাজিস্ট্রেট ইউসুফ
অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডি.কম
শাহজালাল বিমানবন্দরে অনিয়ম প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট ইউসুফ ব্যক্তিগত জীবনে পড়েছেন দারুণ সমস্যায়। টাকার অভাবে নিজের দুই বাচ্চাকে স্কুলে ভর্তি করাতে পারছেন না।
গত ৬ দিন থেকে উত্তরার বিভিন্ন স্কুলে চেষ্টা করেও ভর্তি করাতে পারেননি ইউসুফ। বাধ্য হয়েই সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন এই সরকারি কর্মকর্তা।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, অবাক লাগতো, সরকারি অফিসাররা কেন দুর্নীতি করে! আজ আর লাগে না। ক্ষোভ হয়। কেন আসলাম সরকারি চাকরিতে! দেশের সেবা করতে এসেছি, আমার পরিবার সন্তান কি এদেশের বাইরে? ক্লাস সিক্সের এক সন্তানকে ভর্তি করাতে ১৮ হাজার টাকা দিতে হয়, মাসে ২-৩ হাজার টাকা বেতন দিতে হয়। অথচ আপনি আমাকে দিচ্ছেন দুই বাচ্চার জন্য মাসে মাত্র এক হাজার টাকা শিক্ষা ভাতা, অর্থাৎ প্রতি বাচ্চার জন্য মাসে ৫শত টাকা।
এই অবস্থায় আমি কি করতে পারি?
১. দুর্নীতির আশ্রয় নিতে পারি।
২. বাচ্চাদের পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে পারি।
ম্যাজিস্ট্রেট ইউসুফে বলেন, আমাকে ভাড়া বাসায় থাকতে হয়। চাকরি থেকে যে বেতন পাই তার অধিকাংশ টাকাই চলে যায় বাসা ভাড়ায়। এরপরে যে টাকা থাকে সেটা দিয়ে সংসারের ৩০ দিনের খাবারের তালিকা করতে হয়। ভর্তা, আর ডাল দিয়েই চালাতে হয় মাসের অধিকাংশ সময় এই অবস্থায় আমি কীভাবে এতো টাকা দিয়ে বাচ্চাকে পড়াবো?
তিনি বলেন, আমার সরকারি বাসা পাবার কথা। আমার নামে সিভিল এভিয়েশন থেকে একটা বাসাও বরাদ্দ করা হয় কিন্তু বাসা আমাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। অন্যজন সেই বাসায় থাকে। আমার নামে বরাদ্দ হলেও আমি বাসা পাই না। সেটাও বড় কথা না। আমাকে এয়ারপোর্টের কাছাকাছি থাকতে হয়। এই এলাকায় সরকারি স্কুল তেমন নেই। কাল উত্তরা গার্লস স্কুলে বাচ্চাকে ভর্তি করাতে গিয়ে আমি চোখের পানি ধরে রাখতে পারি নি। আমার মতো অনেকেই বাচ্চাদের ভর্তির জন্য পায়ে ধরার মতো অবস্থা। কিন্তু উপায় নেই।
ইউসুফ বলেন, এই অবস্থায় আমি আবেদন করবো আমাকে যেন খাগড়াছড়ি, বান্দরবান বদলি করা হয় যেখানে অন্তত স্কুলে বাচ্চাদের পড়াতে মাসে এতো টাকা লাগবে না। প্রতিবছর ১৮-২২ হাজার টাকা ভর্তি করাতে লাগবে না।
ইউসুফ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর নিকট আবেদন জানিয়ে লিখেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আমি বলবোনা, আমাদের এই গরীব দেশে দুই বাচ্চার জন্য শিক্ষাভাতা ১ হাজার টাকার বেশী হোক। আমরা চাই, সরকারি বেসরকারি স্কুলগুলোর এই লাগামহীন বেতনবৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরা হোক, যাতে আমার মত আর কাউকে সন্তানের পড়ালেখা বন্ধের সিদ্ধান্ত না নিতে হয়।’