রাণীরবন্দর খাদ্য গুদাম থেকে চাল পাচারকালে জনতার হাতে আটক

দিনাজপুর প্রতিনিধি  । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

দিনাজপুরের রাণীরবন্দর খাদ্য গুদাম থেকে চাল পাচারকালে জনতা হাতেনাতে চাল পাচার কারীকে চালসহ আটক করেছে। ১৩ জুন মঙ্গলবার ওই গুদামের লেবার সর্দার জুয়েল ২৫ বস্তা চাল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন কিন্তু ওই সময় স্থানীয় জনতা বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তাকে ধরে ফেলে। জানা গেছে, রাণীরবন্দর খাদ্য গুদামের উপ-সহকারী খাদ্য পরিদর্শক হাফিজুল ইসলাম ও নিরাপত্তা প্রহরী নুরুল ইসলাম ওইসব চাল তার কাছে বিক্রি করেছে।
একটি সূত্র জানায়, হাফিজুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম ও লেবার সর্দার জুয়েল স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় তারা দীর্ঘদিন যাবৎ সরকারী চাল পাচার করে আসছেন। ওই চক্রটি এসবের মাধ্যমে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনেছেন বলে অভিযোগ মিলেছে।
অভিযোগ মতে, খাদ্য গুদাম থেকে চাল পাচার হচ্ছে এমন তথ্য পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ওই এলাকার গোলাম রব্বানী স্থানীয় লোকজন নিয়ে গুদামের গেটে ওঁৎ পেতে থাকেন। এসময় লেবার সর্দার জুয়েল দুটি ভ্যানে ২৫ বস্তা চাল নিয়ে বের হচ্ছিল। উপস্থিত লোকজন ভ্যান দুটি ঘিরে ধরলে জুয়েল সটকে পড়ে। পরে ওইসব চাল স্থানীয়রা ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়ে যায়।
ওই এলাকার জনৈক গোলাম রব্বানী জানান, রাণীরবন্দর খাদ্য গুদাম এখন দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। সরকারী ধান-চাল-গম ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে। টাকার বিনিময়ে প্রকৃত চাষীকে বাদ দিয়ে মৌসুমী ব্যবসায়ী, দলীয় নেতা-কর্মী বা চাকুরীজীবিদের কাছ থেকে এসব সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাছাড়া লেবার সর্দার জুয়েল, উপ-সহকারী খাদ্য কর্মকর্তা হাফিজুল ও নিরাপত্তা প্রহরী নুরুল ইসলাম একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। অনিয়ম-দূর্নীতির মাধ্যমে এরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন মিল মালিক জানান, এখানে যে সিন্ডিকেটটি রয়েছে তারা চাল পাচার ছাড়াও সরকারী ভাল মানের চাল সরিয়ে নিন্মমানের চাল মজুত রাখে। এমনকি ওই চক্রটি গুদামে রাখা চাল-গমের বস্তায় পাইপিং করে চাল-গম হাতিয়ে নেয়।

খাদ্য গুদামের উপ-সহকারী খাদ্য কর্মকর্তা হাফিজুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে ওই ঘটনার কয়েকজন স্বাক্ষীকে ডাকা হলে তিনি দায়সারা উত্তর দিয়ে কেটে পড়েন। নিরাপত্তা প্রহরী নুরুল ইসলাম জানান, পত্রিকায় লিখে কি হবে? এসব নিয়ে লেখালেখি না করাই ভাল হয়।
চাল পাচারের বিষয়ে জানতে চাইলে লেবার সর্দার জুয়েল ১৩ বস্তা চালের কথা স্বীকার করেন। এসব চাল কিভাবে পেলেন? সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি এর স্বপক্ষে কোন কাগজ-পত্র দেখাতে পারেননি বা কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
এদিকে, চাল পাচারের বিষয়ে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আব্দুর রশিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এখানে যোগদান করার বেশিদিন হয়নি। তাই বিষয়টি এই মুহুর্তে বলতে পারছি না। তবে প্রমাণিত হলে শাস্তিযোগ্য ব্যবস্থা নিব।
চিরিরবন্দর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু হেনা মোস্তফা কামালের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, খাদ্য গুদামে চালের মজুদ যাচাই করে দেখবো। চাল পাচারের বিষয়টি প্রমাণিত হলে এ অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


  • কাগজটুয়েন্টিফোর বিডি ডটকম এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!