গুলিবিদ্ধ হয়ে এক বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত
নিজস্ব প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডি.কম
আফ্রিকার সুদানে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে পরিবারে চলছে শোকের মাতম।বৃহস্পতিবার রাতে আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কর্তব্যরত অবস্থায় সৈনিক আবদুর রহিম স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। তাঁর বাবা আবদুল মজিদ। তাঁর স্ত্রী রুবাইয়া সুলতানা রুনা। তাঁদের পাঁচ মাস বয়সের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে।
এক মাস ২১ দিন আগে শান্তিরক্ষা মিশনে (আফ্রিকার সুদানে) যান আবদুর রহিম। দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার সকালে মাথায় গুলি লেগে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি। তাঁর অকাল মৃত্যুতে হাজীপুর গ্রামই যেন শোকে কাতর।
ছেলের মৃত্যুর খবরে রহিমের মা রওশানারা বেগম পাগলপ্রায়। একই অবস্থা বাবা মজিদেরও। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে তাঁরা অনেকটাই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। আবদুল মজিদ জানান, তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে আবদুর রহিম এসএসসি পাস করার পর গত ২০০৫ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগদান করেন। মেজ ছেলে আবদুল করিম মানসিক প্রতিবন্ধী। মেয়ে রেহেনা খাতুন স্থানীয় একটি স্কুলে নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। ছোট আকৃতির মাটির একটি বাড়িতেই সবাই বসবাস করেন। তাঁর নিজের কোনো জমাজমি নেই। অন্যের ক্ষেতে দিনমজুরি করেই সংসারটা ঘানির মতো করে টেনে নিয়ে যান। বেতন থেকে যে টাকা রহিম পাঠাতেন তা দিয়ে প্রতিবন্ধী ছেলের চিকিৎসার খরচ, মেয়ের লেখাপড়া ও অসুস্থ মায়ের ওষুধের ব্যবস্থা হতো।
নিহত রহিমের স্ত্রী রুবাইয়া সুলতানা রুনা জানান, পাঁচ বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের পাঁচ মাস বয়সী পুত্রসন্তানের নাম আহনাব। রুনা কাঁদতে কাঁদতে আরো জানান, বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর সঙ্গে স্বামী আবদুর রহিমের শেষ কথা হয়। ওই সময় ছেলের দিকে খেয়াল রাখার কথা বলে রাতে বিস্তারিত কথা হবে জানিয়ে ফোন কেটে দেন। পরে আর কথা হয়নি।
রুবাইয়া সুলতানা জানান, প্রতিদিনই স্বামীর সঙ্গে কথা হতো। মিশন থেকে ফিরে সবাই মিলে থাকার মতো একটি বাড়ি তৈরি করার স্বপ্ন ছিল তাঁর। ছেলেটাকে নিয়েও বড় স্বপ্ন দেখতেন আবদুর রহিম।