শুভ ইংরেজি নববর্ষ
শুভ ইংরেজি নববর্ষ
(১৭ এর প্রস্থান ১৮ এর আগমন)
-আওলাদ হোসেন
আমি যা লিখবো বাংলার ঘরে ঘরে সেই একই প্রশ্ন সবাই জানেন, উত্তরও সবাই জানেন। তাহলে আমাকে ২০১৮ খ্রি টি কেমন যাবে, রাজনীতি, অর্থনীতি ব্যবসা বাণিজ্য ইত্যাদি কেমন যাবে এই প্রশ্নও অনেকেই করবেন আর বলবেন ভাসুরের নাম বলা যাবে না। প্রথমেই আসবে গণতন্ত্র বা নির্বাচন নিয়ে। আমি জানি আই.সি.এস. জাঁদরেল কর্মকর্তা প্রথমেই ব্যুরোক্রাসি এর নিয়ম অনুসারে নির্বাচনের ফাইলে কোয়ারি করতে চাইবে পূর্বের নির্বাচনের বিস্তারিত বিবরণ এমনকি প্রার্থীদের অবস্থান, টাকা-পয়সা লেনদেন ইত্যাদিসহ নির্বাচনের ইতিহাসও অবস্থান কিছিল? হতে পারে এটা আই.সি.এস এর আমল এবং শক্তি চর্চার কোন ক্ষেত্র নেই এবং অন্যান্য বিষয়ে কোন বিচ্রুতি ঘটার সুযোগ নেই। তাহলে দেখা যাবে নির্বাচন বাদ দিয়ে আগের কার ইতিহাস টেনে তুলতেই কামসারা। তবে রাজনীতির ক্ষেত্রে অন্যান্য বিষয়ের মত এতটা ক্ষমতা প্রাপ্ত হননা। ফলে সব দল মিলে যা সিদ্ধান্ত নিবে তাই করতে হবে। ব্যুরোক্রাটদের হাতে ক্ষমতা থাকলে তারা নির্বাচন হতে দিত না কারন তাদের হাত ফসকে কিছু পড়ে যেত না, নির্বাচন বন্ধ থাকত অনির্দিষ্ট কালের জন্য। (২) জনগণের হাতে ক্ষমতা থাকলে রাস্তায় শুধু স্লোগান থাকতো কেউ বাধা দিতে পারত না। কিন্তু জনগণের হাতে ক্ষমতা থাকার অর্থ হবে নির্বাচন হলে বলা যেত ফল কি হবে। তা বলা যাচ্ছে না। নির্বাচনের আগেই জনগণকে সব দাবী দাওয়া আদায় করতে হবে। জনগণ তা কি পারবে? নিশ্চই না। কারণ জনগণ বিরোধী দলকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য নিজের জানপ্রাণ, সন্তান-সন্তুতি, ধন সম্পদ খরচ করবে না। বিরোধী দলকে ক্ষমতায় যেতে হবে নিজেদের যোগ্যতায়, তার পরিচয় আগেই পাওয়া যায়, লোকের মুখেই জয়, লোকের মুখেই ক্ষয়। ঠাকুর বাড়ী নিমন্ত্রণ আঁচাইলে বিশ্বাস (৩) প্রতিবেশী রাষ্টের আচরন কেমন হবে? এটা নিশ্চিত হওয়া যাবে নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর। আমরা মধ্যপ্রাচ্য কিন্তু মধ্য প্রাচ্যে থাকি না। ১৬ কোটি বাঙালিকে ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে না। পার্টি স্বার্থ আর জনস্বার্থ এক কথা নয়। এদেশের মানুষ গরীব কিন্তু অত্যন্ত জেদী, যে কোন লোভ লালসা ত্যাগ করতে পারে। এরা যেমন এক জোট ধরতে পারে তেমনি বিচ্ছিন্নভাবেও চলতে পারে। নির্বাচনের দিন আলৌকিক কিছু ঘটবে না বা আসমান থেকে কোন শক্তি নেমে আসবেনা। তাহলে অবস্থা যা আছে তাই থাকবে। কিন্তু আমার কথার কি মূল্য আছে? কানা মনে মনেই যানা অথবা যদি সুযোগ পেয়েই যায় অন্যকিছুর ভর করে ইত্যাদি। তবে ভুল পথে যদি একবার গর্তে ঠ্যাং দেয়া হয় ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় তাহলে খবর আছে। কাজেই চায়ের স্টলেও কোনো খবর পাওয়া যাবে না। বাঙালী বড় চালাক জাত। দুই পক্ষেই সমান তালে চলতে পারে। আমি পবিত্র কোরআন নিয়ে গবেষনা করে দীর্ঘ ৪০/৪৫ বৎসর কাটিয়ে দিয়েছি অথচ মৃত্যুর পর কবর থেকে উঠানো হবে, অনন্তকাল জীবন দেওয়া হবে এবং সবকিছু দেয়া হবে। অর্থাৎ পৃথিবীতে যা আসে তা কোথা থেকে আসে, পরকাল সেখান থেকেই আসবে যা ¯্রষ্টার ওয়াদা এবং রাসুলের (সাঃ) প্রতিশ্রুতি, যারা বিভিন্ন ধর্মসভায় বিভিন্ন আলোচনায় মগ্ন থাকেন তারা এই বিশ^াস মস্তকে ধারণ করে কি না ধারণ করতে পারেন কিনা আমার জানা নেই, তবে আমি আজো পারি নাই। সূরা ইয়াসিন- পড়লে বিস্তারিত বিবরণ পেয়ে যাবেন, কিন্তু মুসলিম এই আমল করবে না কারণ এখানে রস কষ নেই, মাথায় এই সুরাটি স্থান দেওয়া যায়না, কারণ একবার, দুইবার, দশবার পড়লেও একই অবস্থা, শুধু পুনরায় প্রাণ দেয়া হবে। নতুন জীবন শুরু হবে। পৃথিবীতে যেমন প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর, কোথা থেকে এলো, পরকালে সেমপুল এর পরিবর্তে অরজিনালটি আসতে থাকবে, ঠেকাবে কে? যদি আল-কোরআন না থাকতো, বিকৃত হয়ে যেতো, কিন্তু আল কোরআন সম্পূর্ণ মুখস্ত রাখার ব্যবস্থা আছে এবং প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেয়া আছে, সেহেতু ১৬ কোটি মানুষ কিভাবে জীবন যাপন করবে তা বলে দেয়ার কোনো প্রয়োজন হয় না। নিজেই একশত টাকা দিয়ে একটি বাংলা কোরআন কিনে পড়তে থাকুন, যাতে স্ব-শিক্ষিত হতে পারেন, যাতে কে কত বড় পীর, কে কত বড় জাদরেল ধর্মবেক্তা বা বক্তা তা জানার প্রয়োজন হবে না। তবে মুঘল স¤্রাজ্যের পতনের কারণ সমূহ সব সময় স্মরণে রাখতে হবে।
পতনের মূল কারণ হচ্ছে আল কোরআনের শিক্ষা বাদ দেয়া, নারী, মদ, ভোগ বিলাস ইত্যাদিতে গা ভাসিয়ে দেয়া ইত্যাদি। আল্লাাহ্কে যেমন দেখা যায়না, তেমনি নির্দেশ থেকে সামান্য একটু বিচ্যুত হলেই সমগ্র জাতি সহ বঙ্গোপসাগরে নিক্ষিপ্ত হতে পারে। এই ওয়াজ এই পর্যন্তই। পাতার পর পাতা উপদেশ দিতে পারব কিন্তু কেউ তা পড়তেও রাজী না, মানতেও রাজী না, অতএব উলুবনে মুক্ত ছড়িয়ে লাভ নেই, কারণ আল্লাহ্ পাক শয়তানকে প্রতিটি মানুষ বা প্রতিটি দেশের পেছনে লাগিয়ে রেখেছেন। আল্লাহ মেহেরবান গানটি অশ্লীলতার কারণে ব্যান্ড করা হয়েছে অথচ পশ্চিমা দেশে নগ্ন হয়ে গান করার ব্যবস্থা প্রচলিত আছে। অথচ প্রাচীন সভ্যতা ধ্বংস হয়েছে শাস্তিহিসেবে, গোটা জাতি অথবা গোটা দেশ যার ইতিহাস আল কোরআনে বারে বারে উল্লেখ করা আছে। অন্যায় কাজের ফসল অন্যায়, ভালোর প্রতিদান ভালোই হয়ে থাকে। মানুষের উপর আল্লাহ পাক জুলুম করেন না, মানুষ নিজেরাই নিজেদের উপর জুলুম করে। খাল কেটে কুমীর আনবেন না। মীর জাফরের ইতিহাস ভুলে যাবেন না। সামান্য টাকার লোভে মাথা বিক্রী করবেন না এর উদাহরণ সামনেই আছে। লোকধারা সম্পাদক দীনা ভাইকে কলাম লেখার অঙ্গীকার দিয়েছিলাম। কিন্তু ২২/১২/১৭ ইং তারিখের একটি পত্রিকা পড়ে এবং ওয়েব সাইটের ঘটনা পড়ে আমার লেখা হারিয়ে গেছে। এত সুন্দর যে বাঙালিরা লিখতে পারে তা আমার জানা ছিলনা। আমার জন্ম টাঙ্গাইল শহরে অখ্যাত- অজ্ঞাত, তবে কে যে কত দরের দীর্ঘ জীবনের শেষ প্রান্তে আমাকে আর দীক্ষা নিতে হবে না। কেন কোন লেখার কারনে আমার এই উপলব্ধি তা আপনারা অল্পক্ষনের মধ্যেই পেয়ে যাবেন, পড়ে ফেলবেন, আমি শুধু মাওলানা ভাসানীর বক্তৃতায় ছিকায় একটু গুড় লাগিয়ে দিচ্ছি। টাঙ্গাইলের মানুষ সবই জানে, মায়ের কাছে মামার বাড়ীর গল্প, তবে ৫৭ সালের কাগমারীর সম্মেলনে ভিক্টোরিয়া রোডের আমরা কয়েকজন প্রায় প্রতি দিনই যেতাম শুধু চঞ্চলতা আর দূরন্তপনাকে আশ্রয় করে। বিএনপির ভরা ডুবির কারণ, জেনারেলকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরা, শিক্ষাঙ্গনে মধুসুদনের উপমা টেনে এনে শিক্ষা দেয়া, কলামিষ্টদের যুগপোযোগী উপযুক্ত লেখা পড়ে আশাম্বিত হই। এদেশ তোমার আমার ১৬ কোটি জনতার আর ২০১৮ শুভ নববর্ষ, নির্বাচনের বছর শুভ হোক। আমার নিজরে একটি থিওরী আছে ‘দি গ্রোথ অব ম্যানপাওয়ার’ (অনুন্নত দেশের উন্নতি)।
বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় সাংবাদিকদের ০-১% সীমাবদ্ধ থাকবে যা প্রকাশ করা যাবে না। ৬৫% কে স্থানীয়ভাবে নজরদারীতে রাখা হবে। এরা অধিকাংশ রাজধানী ও বড় বড় শহরের বাসিন্দা, ৩৪% গ্রাম ও মফস্বলের বাসিন্দা, এদের নজরদারীর প্রয়োজন নেই, স্বাধীন। এভাবে কত দিন যাবে তা বুদ্ধিজীবীদের ব্যাপার, রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং পরনির্ভরশীলতা বা পরাশক্তির ব্যাপার। যাদের বিষয়টি সহজে আয়ত্তাধীন তারা চিন্তা করতে পারেন। বিষয়টি কঠিন জটিল এবং অনেকেরই আয়ত্বের বাইরে। ১৮ এর পরেই ১৯ আসবে নতুন সাজে।
সবশেষে বলতে চাই কলামিষ্টরা যা লিখতে চান তা ভোঁতা হয়ে গেছে। দেশের রিক্সাওয়ালা থেকে চায়ের ষ্টলে এ সমস্ত কথা মুখস্ত হয়ে গেছে মাইনকা চিপায় কেউ নেই। ইঁদুর গর্ত থেকে গেড়িয়ে গেছে, সাপ গর্তে ঢুকতে সাহস পাচ্ছেনা। যারা যুদ্ধ করেছিল তারা কবরে। যারা বেঁচে আছেন তারা অচল। শিয়াল আর হরিনের গল্প সবাই জানেন, ১৬ কোটি বাঙালির একজোট হওয়া বড় পাওনা। আমি বোকা কিন্তু কম দিলে বুঝি। শুভ ইংরেজি নববর্ষে সবাই চালিয়ে যান, মনে দু:খ নিবেন না। আমি বুঝিনা বাঙালি জোট বাঁধলো কিভাবে? উত্তরটা কলামিষ্টদের কাছে জানতে চাই। এর কৃতিত্ব কার?
- প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। কাগজ২৪-এর সম্পাদকীয় নীতি/মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য কাগজ২৪ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না।
কাগজ টুয়েন্টিফোর বিডি ডটকম এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।