সাউনবোর্ডে নাম থাকলেও নেই ব্যবহারযোগ্য শ্রেণী কক্ষ ও শিক্ষার্থী তবু্ও এমপিওভুক্ত
নাজমুস সাকিব মুন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার সন্দেশ দিঘী নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় সদ্য এমপিওভুক্ত হয়েছে। সাইনবোর্ডে নাম থাকলেও নেই উপযুক্ত শ্রেণী কক্ষ, নেই শিক্ষার্থী তবুও এমপিওভুক্ত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
কাগজে কলমে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সাল ১৯৯৮ উল্লেখ থাকলেও ২১ বছরে বিদ্যালয়টিতে নির্মিত হয়নি ব্যবহারযোগ্য কোন শ্রেণীকক্ষ। স্থানীয়রা জানান, সাইনবোর্ড থাকলেও বিদ্যালয়ের পূর্ণাঙ্গ কোন ভবন নির্মিত হয় নি আজ পর্যন্ত। শিক্ষার্থী ভর্তি ও বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনার কোন প্রশ্নই আসে না।
এমপিও নীতিমালা ২০১৮ অনুযায়ী পাবলিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থী প্রয়োজন ৪০ জন এবং পাসের হার প্রয়োজন ৭০ শতাংশ। কিন্তু এই বিদ্যালয়টি কোন শর্তই পূরণ করে নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই স্কুলে শিক্ষার্থী শেষ ৩ বছরে ২০১৬ তে ২ জন, ২০১৭ তে ৫ জন এবং ২০১৮ তে ১৩ জন। তবুও কীভাবে এমপিওভুক্তি সম্ভব এটাই এখন পঞ্চগড়ে সবার মুখে। পাসের হারও গড়ে ৩৬ শতাংশ।
অবকাঠামো ও শিক্ষার্থী না থাকার পরেও কিভাবে এই সব নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয় প্রশ্ন স্থানীয়দের। অথচ অবকাঠামো, শিক্ষার্থী ও শিক্ষার মান নিয়ে শর্ত পূরণ করলেও অনেক প্রতিষ্ঠান এবারো এমপিওভুক্ত হয় নি। সাধারণ মানুষ বলছেন নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার ফলে একদিকে সরকারের যেমন অহেতুক ব্যয় বৃদ্ধি পাবে অপরদিকে সরকারের এমন পদক্ষেপ প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক ও উপজেলার আলোয়াখোয়া ইউপি সদস্য রতন বিলাশ বর্মণ মুঠোফোনে জানান, এতদিন এমপিওভুক্ত না হওয়ায় আর্থিক দৈন্যতার কারণে বিদ্যালয়ের কক্ষগুলো সংস্কার করা সম্ভব হয় নি। কক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য বসার ও পড়ার জন্য কোন বেঞ্চ না থাকা প্রসঙ্গে রতন বলেন, পর্যাপ্ত বেঞ্চ ছিল তবে বিদ্যালয়ে কোন নৈশ প্রহরী না থাকায় রাতে দুই একটি করে সব বেঞ্চ চুরি হয়ে গেছে। এবারের জেএসসি পরীক্ষায় বিদ্যালয়টি থেকে অংশগ্রহণ করবেন ১৩ জন শিক্ষার্থী বলেন রতন।
কথার এক পর্যায়ে রতন প্রধান শিক্ষকের সাথে প্রতিবেদককে কথা বলিয়ে দিতে চান এবং বিদ্যালয় নিয়ে নেতিবাচিক না লেখতে অনুরোধ করেন।
অভিযোগ রয়েছে, গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ যেন না হয় এজন্য বিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ আটোয়ারী উপজেলার একটি সাংবাদিক সংগঠনের সাথে আর্থিক লেনদেন করেন।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা শিক্ষা অফিসার হিমাংশু কুমার রায় সিংহ বলেন, এমপিওভুক্তিতে তাদের কোনো হাত নেই। এটা এমপি, মন্ত্রী ও সচিবদের বিষয়।