সাতক্ষীরায় কিশোরিকে ধর্ষণের পর হত্যা, যুবলীগ নেতা গ্রেফতার
অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে চঞ্চল্যকর কিশোরী রুপালী হত্যা মামলার আসামী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন (৩৮) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১০ টার দিকে মুন্সিগঞ্জ বাজার এলাকা থেকে শ্যামনগর থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। রুপালি (১৫) মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের ধানখালি গ্রামের মৃত অরুন মন্ডলের মেয়ে।
গ্রেফতারকৃত রুহুল আমিন মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের ধানখালি গ্রামের কাঁলাচাদ গাজীর ছেলে ও মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। তার আদি বাড়ি বুড়িগোয়ালিনি ইউনিয়নের পানখালি গ্রামে।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মান্নান আলি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ রুহুল আমিনকে গ্রেফতার করে। সে চাঞ্চল্যকর রুপালি হত্যা মামলার আসামি। বুধবার সকালে তাকে সাতক্ষীরা আদালতে পাঠানো হয়েছে।
রুপালির মা বুলি দাসী জানান, আনুমানিক ১৩/১৪ বছর আগে তার স্বামী অরুন মন্ডল বাঘের আক্রমনে মারা যায়। এরপর থেকে এক ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে অভাবের সংসার চলে। রুপালি মেজ। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছে সে।
এরপর অভাবের সংসারে টাকা যোগান দিতে সে পার্শ্ববর্তী বাজারে জয়ন্ত’র দোকানে দর্জির কাজ শুরু করে। তিনি বলেন, গত ভাদ্র মাসের শেষ সপ্তাহের দিকে রুপালি সকালে বাড়ি থেকে বের হয় দর্জির কাজ করতে। এরপর সেখানে পূর্ণিমা নামের এক মহিলা তাকে ডেকে নিয়ে যায় বিকাশের ছেলে রাজুর বাড়িতে।
রাজুর ঘরের ভেতরে রুপালিকে ঢুকিয়ে দিয়ে বাইরে থেকে শিকল তুলে পূর্ণিমা লোকজন ডেকে নিয়ে আসে। এসময় যুবলীগ নেতা রুহুল আমিনসহ কয়েকজন এসে ঘরের ভেতর যেয়ে রাজুকে মারপিট করে তাড়িয়ে দেয়। এরপর রুপালিকে নিয়ে রুহুল আমিন ওই ঘরে দরজা দিয়ে একাধিকবার ধর্ষন করে।
তিনি আরো বলেন, রুহুল আমীন সরকার দলীয় লোক হওয়ায় তার এবং তার বাহিনীর ভয়ে আমার মেয়েকে উদ্ধার করতে কেউ এগিয়ে আসেনি। এমনকি পুলিশও নয়। এক পর্যায়ে সন্ধ্যার দিকে মেয়ে রুপালিকে ওই ঘর থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। রুপালি’র গায়ের ওড়না তার গলায় পেচিয়ে ঘরের বেড়ায় জড়ানো ছিলো।
পরবর্তীতে পুলিশ এসে রুপালির লাশ থানায় নিয়ে যায়। এসময় পূর্ণিমাকেও নিয়ে যায় পুলিশ। কিন্তু পরে তাকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বুলি দাসি আরো জানান, মামলার বাদী করা হয়েছে ছেলে উত্তমকে। তবে পুলিশ সেময় তাকে কোন কিছু না জানিয়ে এজাহারে সই করে নিয়েছিলো। তিনি বলেন, মামলার অন্য আসামী মইনুল, আয়ুব, আব্দুল, সুশান্ত, ভোলা, জলদস্যু রবসহ অনেকেই প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মামলা তুলে নিতে তাকে হুমকি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, মামলা দায়েরের পর রাজু স্ব-পরিবারে ভারতে চলে যায়। তবে, মাঝে মাঝে গ্রামে ফিরে আসে। তিনি মেয়ে হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন প্রশাসনের কাছে।