সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন আর নেই
অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার অন্যতম সাক্ষী এবং ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরের সুন্দরবন সাব-সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন আহমেদ আর নেই। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শুক্রবার ভোরে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গত মঙ্গলবার শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি হওয়ায় মঙ্গলবার মধ্যরাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেসে সিঙ্গাপুর নেয়া হয়।
গত ১৩ জুলাই সোমবার বেলা ১১টায় রাজধানী স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্ট্রোক করেন তিনি। এরপর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। দ্রুত লিভার প্রতিস্থাপনের করতে দ্রুত দেশের বাইরে নেওয়ার পরামর্শ দেন স্কয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এ জন্য পারিবারিক ব্যবস্থাপনায় ওইদিন রাতেই তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়।
মেজর জিয়ার স্ত্রী কানিজ মাহমুদা জানিয়েছিলেন, তার লিভার সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। দ্রুত লিভার প্রতিস্থাপন করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প পথ নেই। দেশে সম্ভব না হওয়ায় তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়।
বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন পিরোজপুর জেলা শহরের সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দীন আহম্মেদের ছেলে। ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন এবং সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট পদে যোগদান করেন। তিনি ১৯৭১ সালে সেনাবাহিনীর মেজর হিসেবে পশ্চিম পাকিস্তানে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে জুলাই মাসে পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে যোগ দেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। দায়িত্ব পান ৯ নম্বর সেক্টরের সুন্দরবন অঞ্চলের সাব সেক্টর কমান্ডার হিসেবে। মুক্তিবাহিনীর জেড ফোর্সের অধীনে প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক হিসেবে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
বীরত্বের সঙ্গে সুন্দরবন অঞ্চলকে শত্রুমুক্ত রাখার জন্য তাকে সুন্দরবনের ‘মুকুটহীন সম্রাট’ বলা হয়। সুন্দরবন রক্ষার জন্য তিনি ‘সুন্দরবন বাঁচাও’ নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। কখনও জেলেদের নিয়ে, কখনও প্রশাসনের সহায়তায় ওই অঞ্চলে ডাকাত নির্মূলে তিনি ভূমিকা পালন করেন। ডাকাতরা কয়েকবার তাকে হত্যার চেষ্টা করে।