সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের দশম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
অনলাইন ডেক্স । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
আজ ৫ সেপ্টেম্বর সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী, বিএনপি নেতা এম সাইফুর রহমানের দশম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৯ সালের এই দিনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান। সিলেট বিভাগের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য এলাকায় তার নাম উজ্জ্বল। তার মৃত্যুবার্ষিকী পালনে দোয়া, মিলাদ মাহফিল, স্মরণসভাসহ নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক এম ইদ্রিস আলী।
এম সাইফুর রহমান বাণিজ্যমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী ও একাধিকবার অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৭৬ সালে জিয়াউর রহমান সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা হিসেবে। তিনি ১৯৭৯ সালে মৌলভীবাজার-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে ষষ্ঠ ও সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-৩ আসন এবং ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-৩ ও সিলেট-১ আসন থেকে নির্বাচিত হন। অর্থমন্ত্রী হিসেবে সংসদে ১২ বার বাজেট উপস্থাপনের রেকর্ড রয়েছে তার।
বরেণ্য এই রাজনীতিবিদের স্মরণে ‘মরহুম এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদ’ ছাড়াও দলীয়ভাবে বিএনপির স্থানীয় জেলা ও উপজেলার নেতাকর্মীরা সকালে মরহুমের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মিলাদ মাহফিল, দোয়া ও বেলা সাড়ে ১১টায় স্মরণসভাসহ নানা কর্মসূচি নিয়েছেন। মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে তার গ্রামের বাড়িতে কোরআন খতম, মিলাদ, দোয়া, শিরনি বিতরণ করা হবে।
এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদ ছাড়াও দলীয়ভাবে বিএনপির স্থানীয় জেলা ও উপজেলার নেতাকর্মীরা সকালে মরহুমের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মিলাদ মাহফিল, দোয়া ও ১১টায় স্মরণসভাসহ নানা কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন মৌলভীবাজার জেলা ও উপজেলা বিএনপির নেতারা। সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হকের নেতৃত্বে সিলেট জেলা ও মহানগরের নেতারা মরহুমের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন এবং পরে স্মরণসভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
মৌলভীবাজার জেলা জামে মসজিদসহ জেলা ও উপজেলার মসজিদগুলোতে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ঢাকায় এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন অডিটোরিয়ামে বেলা সাড়ে ৩টায় স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে। স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করবেন বিএনপির কেন্দ্রীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ডা. খন্দকার মোশারফ হোসেন ও বিশেষ অতিথি থাকবেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ও জাতীয় নেতারা।
মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি মো. ফয়জুল করিম মূয়ন বলেন, ‘এম সাইফুর রহমান মানুষের হৃদয়ে ঠাঁই পেয়েছেন। তিনি মানুষের কল্যাণে করা উন্নয়নমূলক কাজের স্বীকৃতিও পেয়েছেন। বরেণ্য এই রাজনীতিবিদের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’
মরহুম এম সাইফুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র সাবেক এমপি ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি এম নাসের রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার বাবা সবসময়ই মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পছন্দ করতেন। বৃহত্তর সিলেটে তিনি যে দৃষ্টান্তকারী উন্নয়ন করে গেছেন এটিই তার বড় প্রমাণ। বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’
সাইফুর রহমানের জন্ম ১৯৩২ সালের ৬ অক্টোবর মৌলভীবাজারের বাহারমর্দনে। তার বাবার নাম মোহাম্মদ আবদুল বাছির, মায়ের নাম তালেবুন নেছা। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ছিলেন তিনি। ১৯৪৯ সালে মেট্রিকুলেশনে উত্তীর্ণ হন। সিলেটের এমসি কলেজ থেকে আইকম পাস করে ১৯৫১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য লন্ডনে যান। তবে ব্যারিস্টারির পরিবর্তে পড়েন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি। ১৯৫৯ সালে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্স ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ফেলোশিপ অর্জন করেন। এছাড়া তিনি আর্থিক ও মুদ্রানীতি এবং উন্নয়ন অর্থনীতিতে বিশেষায়িত শিক্ষা গ্রহণ করেন। ১৯৬০ সালে বেগম দূররে সামাদ রহমানকে বিয়ে করেন। তিনি তিন ছেলে ও এক কন্যা সন্তানের জনক। ২০০৩ সালে তার স্ত্রী ইন্তেকাল করেন। ২০০৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তিনি এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। তার শেষ ইচ্ছানুযায়ী বাহারমর্দনে তাকে দাফন করা হয়।