সিরাজগঞ্জে পুলিশের গুলিতে বিএনপি প্রার্থী রুমানা মাহমুদসহ আহত ২০, স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়েছে মেরিনার দুই চোখে
অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
সিরাজগঞ্জ শহরে পুলিশের গুলি ও লাঠিচার্জে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সিরাজগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী রুমানা মাহমুদসহ অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এসময় রুমানা মাহমুদের পিটে, পায়ে ও হাতে গুলির স্প্লিন্টার লেগেছে। এছাড়া গুলিতে শহর মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেরিনার দুচোখ নষ্ট হয়ে গেছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, অন্তত ৭ জন পুলিশের রাবার বুলেট ও টিয়ার শেলের আঘাতে আহত হয়েছেন। শহরের কলেজ রোড ও বিএনপি কার্যালয়ের সামনে মাগরিবের নামাজের পর এ ঘটনা ঘটে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু জানান, সিরাজগঞ্জ-২ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী রুমানা মাহমুদ সন্ধ্যার পর শহরে গণসংযোগের জন্য জেলা বিএনপি কার্যালয়ে যান। সেখানে আগে থেকে বিএনপি ও অঙ্গদলের হাজারো নেতাকর্মী ও সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।
ধানের শীষের প্রার্থীসহ নেতাকর্মীরা যখন গণসংযোগে বের হবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখন ১০-১২টি মোটর সাইকেলে করে ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে মহড়া দেয়। মাগরিবের পর এক পর্যায়ে তারা জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দুইটি ককটেল ছুঁড়ে।
এ সময় বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা তাদের ধাওয়া দেয়। টুকু জানান, পর মুহুুর্তে সেখানে পুলিশ আসে এবং বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পুলিশ। এক পর্যায়ে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের পর ছর্রা গুলি ছুড়ে।
টুকু জানান, পুলিশের ছোড়া গুলির কয়েকটি স্প্লিন্টার সিরাজগঞ্জ-২ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী রুমানা মাহমুদের শরীরে বিদ্ধ হয়। চিকিৎসকরা তার পিঠ, পা ও হাত থেকে বেশ কয়েকটি স্প্লিন্টার বের করেন। এছাড়া পুলিশের ছোঁড়া গুলির স্প্লিন্টারে দুই চোখে বিদ্ধ হয়েছে এক মহিলা দল নেত্রীর। সিরাজগঞ্জ পৌর কমিশনার হেলেনার গলায়, জেলা ছাত্রদল সভাপতির গলায়, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ সুইটের মাথায় স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়।
এদিকে সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু জানিয়েছেন, নির্বাচনী প্রচারণার উদ্দেশে রুমানা মাহমুদের হোসেনপুরের বাসার সামনে থেকে মিছিল নিয়ে বিএনপি কার্যালয়ে যাওয়া হবে-এমন সংবাদ পেয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে মিছিল নিয়ে গিয়ে মহড়া দিতে থাকে।
বিষয়টি পুলিশকে অবগত করা হলে পুলিশ দলীয় কার্যালয়ের আশাপাশে অবস্থান নেয়। সন্ধ্যার পর আমরা কলেজ রোড দিয়ে মিছিল নিয়ে মোড়ে যাবার পরই পুলিশ টিয়ার শেল-রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষে বাবার বুলেটের আঘাতে বিএনপি প্রার্থী রুমানা মাহমুদ আহত হয় এবং গুলি লেগে মেরিনা নামে এক মহিলা নেত্রীর দুচোখ নষ্ট হয়ে গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
এছাড়াও দলের আরও অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ বিষয়ে সদর থানার ওসি মোহাম্মদ দাউদ জানান, পুলিশ টহল দেয়ার সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের গাড়ির ওপর হামলা চালায়। এ সময় রাবার বুলেট টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। হামলায় পুলিশের একটি গাড়ির গ্লাস ভাঙচুর করা হয় এবং কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। সূত্র-মানবজমিন।