সুচিত্রা সেনের পাবনার বাড়ী আজও অবহেলিত

 

 

সুচিত্রা সেনের পাবনার বাড়ী আজও অবহেলিত
সিডনীর কথামালা-৭৬
রণেশ মৈত্র (সিডনী থেকে)
সভাপতিমন্ডলীর সদস্য,ঐক্য ন্যাপ

সুপ্রিম কোর্টের একজন সম্মানিত আইনজীবীর পরিচালনায় জামায়তের দায়ের করা রায়ে আপীল বিভাগ সুচিত্রা সেনের পাবনাস্থ একতলা বাড়ীটি জামায়াতের দখলমুক্ত করে দেশবাসীর শ্রদ্ধা সম্মান অর্জন করেছিলেন অকুণ্ঠভাবে রীটে দাবী করা হয়েছিল যেহেতু জামায়াতে ইসলামীকে ঐ বাড়ী ও জমি ‘একমনা’ লিজ নিয়েছিল এবং কদাপি তা স্থায়ী লিজ দেওয়া হয় নি তাই পাবনার জনগণের দাবী অনুযায়ী পাবনার তৎকালীন জেলা প্রশাসক ঐ একমনা লিজ বাতিল করে অত্যন্ত বৈধ কাজ করেছেন। কারণ, অর্পিত সম্পত্তি আইনের বিধান অনুযায়ী যেহেতু একমনা লিজ বাতিলযোগ্য তাই লিজ বাতিল করাটা সঙ্গত হয়েছে।
এই রায়টি হাইকোর্টের প্রদত্ত রায়ের আপীলের রায়। প্রায় তিন বছর আগেরকার। তার আগে জামায়তে ইসলামী পাবনার জেলা প্রশাসকের লিজ বাতিলের চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রীট দায়ের করে। ঐ রীটের উভয় পক্ষের পূর্ণাঙ্গ শুনানাী অন্তে হাইকোর্ট জামায়াতের রীট আবেদনটি খারিজ করে দিয়ে বিচারকেরা বলেন যে জেলা প্রশাসন, পাবনা, সুচিত্রা সেনের বাড়ীটি জামায়াতে ইসলামীকে আশির দশকে যে লিজ দিয়েছিলেন তা বার্ষিক লীজ এবং বার্ষিক লীজ হওয়াতে জেলা প্রশাসক তা যে কোন সময় কোন সময় খারিজ করে দিতে পারেন। আইনের বিধানটা এমনই। তাই জেলা প্রশাসকের আদেশকে বৈধ বিবেচনায় এরীটটি খারিজ করে দেওয়া হলো।
হাই কোর্ট ঐ আইনের সূত্র ধরেই জেলা প্রশাসক অতীতে প্রদত্ত লিজ বাতিল করে যে আদেশ দিয়েছিলেন তা বাতিল করে যে আদেশ দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ বৈধ। এবং এই রায়ের খবর সকল সংবাদপত্রের শুরুত্বসহকারে প্রকাশিত হয়। এমন আদেশ পাবার পর জামায়াতের পক্ষ থেকে সুপ্রীম কোর্টে আপীল করলে সুপ্রিম কোর্ট আপীলটি খারিজ করে দিয়ে হাইকোর্টের রায়টিকেই বহাল রাখেন।
পাবনার সর্বস্তরের জনগণ বাড়ীটি থেকে জামায়তে ইসলামীকে উচ্ছেদ করে সেখানে সুচিত্র সেনের স্মরণে একটি যাদুঘর কমপ্লেক্স, নাটক পরিবেশন উপযোগী একটি আধুনিক মঞ্চ ও অন্তত: ৩০০ আসন বিশিষ্ট একটি হল এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র যাতে পাবনার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান তাদের অফিস স্থাপনের জন্য ভাড়া নিতে পারে এমন নানা কিছু সুবিধা সম্পাদন কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করে তাদের প্রিয় অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনকে স্মরণীয় করে রাখতে পাবনার সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে মুখরিত করে তোলার ব্যবস্থা করা হবে এমন স্বপ্নই দেখছিলেন।
সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসকি রায়ের পর যে উল্লাস পাবনার জনমনে ছড়িয়ে পড়েছিল তাও স্মরণে রাখার মত। রায়ের নকল পাবনাতে পৌঁছাতেও অন্তত: তিন মাস সময় লেগে যায়। ওটা পাওয়ার পর ঐ কপি সহ জামায়তে ইসলামীকে পাবনার জেলা প্রশাসক ঐ বাড়ীটি ছেড়ে দিতে নোটিশ পাঠান।
এর পর জামায়াতে ইসলামী নানা আবেদন নিবেদন জেলা কর্তৃপক্ষের কাছেও জানাতে থাকে। বাড়ীটিতে তারা স্কুল স্থাপন করেছে বলে জানিয়ে তারা সময়ের প্রার্থনাও জানায়। এভাবে সময় ক্ষেপনের পর অবশেষে তারা তাদের আসবাপত্র সরিয়ে নিয়ে বিধি মোতাবেক পাবনার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত ভাবে বাড়ীর দাবী পরিত্যাগ করে দখল হস্তান্তর করে। এ কাহিনীও বছর তিনেক আগের কথা। ঐ হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতাকালে সুচিত্র সেনের বাড়ীতে আরও অনেকের মত আমারও উপস্থিত থাকার সুযোগ ঘটেছিল। তখন সংক্ষেপে বাড়ীটাকে “অর্পিত (শত্রু) সম্পত্তি” হিসেবে আর বজায় না রেখে ওটাকে একটি ট্রাস্ট গঠন করে তার হাতে হস্তান্তর করে (সরকারী-বেসরকারী সম্মানিত ব্যাক্তদের সমবায়ে) তার হাতে হতস্তান্তর করে দু’বছরের মধ্যে বাড়ীটার মূল পুরাতন দালানটির একই আদলে তার পুর্ণনির্মাণ ও পতিত জায়গায় বহুতল দালান নির্মাণ করে সেখানে সুচিত্রা নাট্য ভবন, সুচিত্রা সংস্কৃতি কেন্দ্র সহ পাবনার সংস্কৃতি উন্নয়ন কেন্দ্রে পরিণত করায় আহ্বান জানিয়ে দ্রুত একটি আর্কাইভ করার জন্য সুচিত্রা সেনের কণ্যা মুনমুন সেনকে আমন্ত্রণ জানিয়ে এনে সে বাপারে তাঁকে সহ বৈঠকও আলোচনা করে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করে দ্রুত অগ্রসর হতে। উপস্থিত সুধীজন ও সরকারী কর্মকর্তারাও তাতে সম্মত দিয়ে বক্তব্য রাখেন। অত:পর অনুষ্ঠানের সমাপ্তির পরে বাড়ীটিতে ঢুকবার দরজায় তালা লাগানো হলো। আর ছ্ট্টো একটি সাইনবোর্ড ঝুলানো হলো – তাতে লেখা ছিল “বাড়ীটি অর্পিত সম্পত্তি জেলা প্রশাসক, পাবনা।”

সেই যে তালাবদ্ধ হলো আজও তাই আছে। কোন মেরামত পর্য্যন্ত নেই। কোন কেউ বাইরে থেকে এসে দেখতে চাইলে তাঁকে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে একজন সরকারী প্রতিনিধি সাথে নিয়ে বাড়ীটিতে ঢুকতে হয়। অথচ দেশী-বিদেশী অনেক সংস্কৃতি ও ইতিহাসমনা পর্য্যটকই সুচিত্র সেনের পৈত্রিক বাড়ীটি দেখতে আগ্রহী এমন জোন চিন্তা সরকার আদৌ করছেন বলে মনে হয় না।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী আসাদুজ্জ্বামান নূর পাবনাতে এসেছিলেন বছর দুয়েক আগে। তখন জীবনের প্রথম ঐ বাড়ীটি দেখে সুচিত্রা সেনের অবদান শ্রদ্ধার সাথে সংরক্ষণের আস্বাস দেন। কিন্তু তারপর থেকে আজতক এব্যাপারে দৃষ্টনীয় কোন অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয় না। জাতীয় সংসদেও এ নিয়ে কান আলোচনা হয়েছে বলে জানা যায় না। সরকারও নীরব।
তবে কি সুচিত্রা সেনের ঐ বাড়ীটি বরাবরের মত জরাজীর্ণ অবস্থায় উপেক্ষিতই থেকে যাবে? জামায়াতে ইসলামীকে উৎখাত করে তা শুধুমাত্র তালাবদ্ধ করে রাখার জন্যেই কি মামলা-মোকর্দমা হয়েছিল? পাবনার জনগণ আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছিল? বিষয়টি জনগণকে পরিস্কার করে জানানোর দায়িত্ব একন সরকারের এবং দেশবাসী অবিলম্বে তা জানতে চায়।
এবারে আমরা নতুন করে জেনে নিতে চাই সুচিত্রা সেনকে পাবনার মেয়ে রমাকে। রমা দাসগুপ্ত। তৎকালীন পাবনা জেলাতেই সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থানায় মাতুলালয়ে, ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল তার জন্ম বয়সে তিনি আমার মাত্র দু বছরের বড় তাই অনেকে সমবয়সী বলেও ভাবেন। রমা ছিলেন করুনাময় দাশগুপ্ত ও রমা দেবীর পঞ্চম সন্তান। করুনাময় চাকুরী করতেন পাবনা পৌরসভায় স্বাস্থ পরিদর্শক পদে। আজীবন তিনি ঐ পৌরসভাতেই। কর্মরত থেকে পাকিস্তান এলের দেশত্যাগ করেন।
সুচিত্রা তো রমাকে ছাড়িয়ে যায়। সারা দুনিয়া তাঁকে চেনে সুচিত্রাসেন নামে আমরাও তাঁকে তাই বলি। সুচিত্রা হওয়ার আগে নেহাযেত শৈশবে তিনি পড়তেন মহাখালি পাঠশালায়। পাকিস্তান আমলের সাম্প্রদায়িক মনোভাবপন্ন বাংলাদেশী এক নেতার চেষ্টায় বর্তমানে স্কুলটির নাম পাবনা টাউন গার্লস স্কুল পাবনা টাউন হলের ঠিক বিপরীতে অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরীর দক্ষিণে। আজকের প্রজন্ম জানেই না যে ঐ স্কুলটির প্রতিষ্ঠাকালীন নাম কি ছিল কাদের অবদানে স্কুলটি নির্মিত হয়েছিল এবং কেনই বা স্কুলের নাম বদলানো হলো?
প্রাসঙ্গিকভাবেই প্রশ্ন জাগতে পারে, কে, পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের নামটা তো বদলানো হলো না কিন্তু দিব্যি বদলনো হলো সরস্বতী পাঠশালার নাম, গান্ধী বালিকা বিদ্যালয়ের নাম, পাবনা শহরের অসংখ্য সড়ক ও গলির নাম। জানা ভালো, একজন আওযামী লীগ নেতা যখন পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন, শহরের রাস্তাঘাটের নাম তখন তাঁরই উদ্যোগে পাল্টনো হয়। শুধুমাত্র ইতিহাসের বিষয় বলেই উল্লেখ করলাম।
ফিরে আসি সুচিত্রাসেন প্রসঙ্গে। তিনি মহাকালি পাঠশালার পর পাবনা গার্লস হাই স্কুলে পড়াশুনা করেন নবম শ্রেণী পর্য্যন্ত। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগ-পাস্তিান প্রতিষ্ঠা। পরিণতি স্বরূপ নিজস্ব বাড়ীঘর ফলে রেখে সপরিবারে করুনামায় দাশগুপ্তের দেশত্যাগ এবং অত্যন্ত কম বয়সেই তাঁর সুন্দরী প্রতিভাময়ী কন্যা রমার বিয়ে। মাত্র ১৬ বছর ছিল তার বয়স।
তৎকালীন ঢাকার বিশিষ্ট ধনাঢ্য শিল্পপতি আদিনাথ সেনের ছেলে দিবানাথ সেনের সাথে ১৯৪৭ সালে বিয়ের পর থেকেই সুচিত্র সেন (দাশগুপ্ত উধাও হলো বিয়ের পরেই) স্থায়ী ভাবে কলকাতার বাসিন্দা হন।
অভিনয় শিল্পের প্রতি সৈশবেই পাবনা গার্লস স্কুলে পড়ার সময় থেকেই আকৃষ্ট হয়েছিলেন সুচিত্র-বিয়ের পরে কলকাতায় বৃহত্তর পরিসরে সুচিত্রা সেনের জীবনের তাঁর জীবনের পরম প্রিয় আরাধ্য অভিনয় অঙ্গনে ঢুকবার অপূর্ব সুযোগ পেয়ে যান।
বিয়ের মাত্র পাঁচ বছর পর ১৯৫২ সালে অভিনয় জীবনে প্রবেশ করে তিনি প্রথম যে চিত্রে অভিনয় করেন তার নাম “শেষ কোথায়?” কিন্তু দুর্ভাগ্য বশত: এ ছবিটি মুক্তিলাভ করে নি। ১৯৫৩ সালে পর পর দুটি ছবিতে সুচিত্রা অভিনয় করেন যার একটি হলো “সাত নম্বর কয়েদী” এবং অন্যটি “শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য” ১৯৫৩ সালেই অভিনয় করেন তাঁর চতুর্থ ছবি “সাড়ে চুয়াত্তর এটির নায়ক ছিলেন উত্তম কুমার। ছবিটি সারা বাংলায় প্রচন্ড আলোড়ন তোলে। এর পর থেকেই সুচিত্রা এবং উত্তমের অভিনয় নৈপুন্য অসীম উচ্চতায় উঠতে থাকে যা একদিন জনপ্রিয়তার সর্বোচ্চ চুড়ায় সুচিত্রা ও উত্তম জুটিকে পৌঁছে দেয়।
সুচিত্রা সাকুল্যে ৬০ টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। দেশ বিদেশ থেকে তাঁর অর্জন বিস্তর সম্মননা। বাংলা ছবির মহানায়িকা সুচিত্রা সেন হিন্দীতেও কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেন। ২০০৫ সালে ভারত সরকার সুচিত্রা সেনকে সম্মাননা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সুচিত্রা সেন তখন চলে গেছে লোকচক্ষুর অন্তরালে। তার আগেই হারিয়েছেন তাঁর স্বামী দিবানাথকে যিনি সুচিত্রাসেনকে চিত্রাভিনয়ে উৎসাহী করেছিলেন। উল্লেখ্য দিবা নাথের বাবাও তাঁর আদরের পুত্রবধূকে অভিনয় শিল্পে যোগ দিতে উৎসাহিত করেছিলেন।
সুচিত্রা-উত্তম জুটির অভিনয় ছিল মূলত: রোমান্টিক ছবিগুলিতে এবং তাঁদের অভিনয় নৈপুন্য গোটা বিশ্বে বিপুলভাবে সমাদৃত হয়েছে-গৌরাবান্বিত করেছে সমগ্র বাংলা অভিনয় জগতকে।
স্বামী ও উত্তম কুমার উভয়েই মারা যান পর পর। হয়তো বা সে কারণেই তাঁর শোকস্তব্ধ হৃদয় ও মন অভিনয় জগত থেকে সুচিত্রা সেনকে নীরবে সরিয়ে নিয়েছিল। শুধু অভিনয় জতই নয় সমস্ত বহির্জগত থেকেও তিনি চলে যান কোলাহলমুক্ত তাঁর নিজস্ব বাড়ীর অন্তরালে। এই অন্তরালবাসী সুচিত্রাকে আমরা চিরতরে হারাই ১৭ জানুয়ারী ২০১৪ সনে সকাল নয়টার দিকে বেলভিউ হাসপাতালে। সেদিন কি বাঙালি মুহুর্তকালের জন্যও শোকাহত হৃদয় নিয়ে কোন কাজে মন বসাতে পেড়েছিল? জানি, ঐ প্রশ্নের উত্তর কোনদিনই পাওয়া যাবে না। তবে নীরবে হলেও চোখের জল অনেকেই স্মরণ করতে পারেন নি।
মাত্র তিন বছর হলো সুচিত্রার দেহটি পৃথিবীতে নেই কিন্তু তিনি তো চিরস্থায়ী ঠাঁই করে নিয়েছেন মানুষের হৃদয়ে।
আমরা কি সেই মহানায়িকার প্রতি তাঁরই বাড়ীটি উপযুক্তভাবে সংরক্ষণ করে সুচিত্রা সেনের প্রতি আমাদের হৃদয় মথিত আবেগ ও তাবৎ শ্রদ্ধা ও আন্তরিকতা দিয়ে সরকারী আমলাতান্ত্রিকতার হাত থেকে বাড়ীটিকে মুক্ত করে তাঁর মর্য্যাদা রক্ষা করতে এখুনি এগিয়ে আসবো না? না কি প্রাধান্য পাবে আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘ সূব্রত ও সুত্রতা ও সরকারী নীরবতা?

  • প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব কাগজ২৪এর সম্পাদকীয় নীতি/মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য কাগজ২৪ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!