স্ত্রীর মামলায় কারাগারে পুলিশ কর্মকর্তা
অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের একদিন পর চট্টগ্রামের পটিয়া থানা থেকে প্রত্যাহারকৃত (ক্লোজড) ওসি রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে খুলনার একটি আদালত। রবিবার দুপুরে খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক মো. নুরুল আমিন বিপ্লব এ নির্দেশ দেন। পরে তাকে খুলনা জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ।
স্ত্রী নাছরিন আক্তার রুমার দায়ের করা নির্যাতন মামলায় সকালে ওই আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত তা নামঞ্জুর করেন।
স্ত্রী রুমা নির্যাতনে অভিযোগ এনে চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্বামী রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। রবিবার এ মামলার শুনানির দিন ধার্য ছিল।আদালতের আদেশের পরপরই মামলার বাদী রুমা এজলাসের বাইরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আদালত আমার আকুতি শুনেছেন। এখন এ ধরনের একজন অপরাধীর সঠিক বিচার চাই।’
রবিবার আদালতে জামিন শুনানিতে বাদীপক্ষে অংশ নেন জেলা জজ আদালতের পিপি কাজী আবু শাহীন, নারী ও শিশু নির্যতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অলোকা নন্দা দাস, আব্দুল লতিফ, বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার জেলা সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক, সমন্বয়কারী মোমিনুল ইসলাম ও হিমাংশু চক্রবর্তী। আসামিপক্ষে ছিলেন রজব আলী সরদার।
পিপি অলোকা নন্দা দাস মামলার এজাহারের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ১৯৯৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার লাকসাম থানার সাতবাড়িয়া গ্রামের রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরীর সাথে বিয়ে হয় খুলনার খালিশপুর নতুন কলোনির মৃত আব্দুল খালেকের মেয়ে নাছরিন আক্তার রুমার। দুই বছর আগে চট্টগ্রামের পটিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় রেফায়েত মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জড়িত হয়ে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন এবং হ্যাপী চৌধুরী নামের এক নারীর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন। বিষয়গুলো জানার পর প্রতিবাদ করায় স্ত্রী রুমাকে দিনের পর দিন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন পুলিশ কর্মকর্তা রেফায়েত।
শনিবার স্ত্রী রুমা স্বামী রেফায়েতের বিরুদ্ধে নির্যাতনের নানা বিবরণ তুলে ধরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলেছেন পুলিশ পরিদর্শক রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরী। একই সঙ্গে চালিয়ে যাচ্ছেন একাধিক পরকীয়া প্রেম। এসবের প্রতিবাদ করায় চরম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন স্ত্রী নাছরিন আক্তার রুমা। কেড়ে নেয়া হয়েছে দুই কন্যা রাইসা বিনতে চৌধুরী (১৫) ও নানজীবা চৌধুরী (৯)। একজন পুলিশ কর্মকর্তা কিভাবে এত অঢেল সম্পদ অর্জন করেছেন তা খতিয়ে দেখতে তিনি দুদকের প্রতি আহ্বান জানান।