স্বৈরাচার পতন দিবস।
সম্পাদকীয় ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
আজ ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার পতন দিবস। বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন-সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় দিন।
১৯৮২ সালে মার্চ মাসে রক্তপাতহীন এক সেনা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা গ্রহণ করেন স্বৈরশাসক এরশাদ। ব্যাপক আন্দোলনের মুখে স্বৈর সরকার ১৯৮৭ সালে সাধারণ নির্বাচন দিতে বাধ্য হলেও ব্যাপক জালিয়াতি ও অনিয়মের কারণে এই নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করে বিরোধী দলগুলো।
তাদের একমাত্র দাবি ছিলো, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর একযোগে স্বৈরশাসক এরশাদের পতনের লক্ষ্যে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় দেশের দুটি প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি।
হাজারো প্রতিবাদী যুবকের সঙ্গে জীবন্ত পোস্টার হয়ে সেদিন রাজপথে নেমে এসেছিলেন নূর হোসেন। তার বুকে-পিঠে লেখা ছিল ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’ এই জ্বলন্ত স্লোগান।
আন্দোলনকারীদের একটি মিছিল ঢাকা জিপিও’র সামনে জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি আসলে স্বৈরশাসকের মদদপুষ্ট পুলিশ বাহিনীর গুলিতে নূর হোসেনসহ মোট তিনজন আন্দোলনকারী নিহত হন, আহত হন বহু। নিহত অপর দুই ব্যক্তি হলেন যুবলীগ নেতা নুরুল হূদা বাবুল এবং আমিনুল হূদা টিটু।
এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় বিরোধী দলগুলো ১১ ও ১২ই নভেম্বর সারা দেশে সকাল সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করে। বিক্ষোভে ফেটে পড়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ। আরও ত্বরান্বিত হয় স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন।
এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পদত্যাগ করতে বাধ্য হন স্বৈরশাসক এরশাদ। এর মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটে, পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় গণতন্ত্র।
আজকের এ দিনে আমি ’৮২ থেকে ’৯০ পর্যন্ত রক্তস্নাত স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে আত্মদানকারী বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই এবং তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করি।
মাহবুব এইচ শাহীন/প্রকাশক ও সম্পাদক/কাগজ২৪